প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১, ২০২১
মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেত্রী অং সান সু চিসহ দলটির কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে গ্রেপ্তারের পর দেশটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনাবাহিনী। গত নভেম্বরের নির্বাচনে এনএলডি জালিয়াতি করে ক্ষমতায় এসেছে বলে আগে থেকেই অভিযোগ করছিল দেশটির সেনাবাহিনী। অবশেষে তারা সামরিক অভ্যুত্থানের ঘোষণা দিলো।
আজ সোমবার বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ সোমবার দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থান ঘোষণা করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইতোমধ্যে সেনাবাহিনী দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
সর্বশেষ নির্বাচনে মিয়ানমারের বিভিন্ন জেলার ভোটের তালিকায় নকল নাম থাকাসহ বেশকিছু অভিযোগ আনে দেশটির সেনাবাহিনী। এ নিয়ে অভিযোগ জানালেও নির্বাচন কমিশন তাতে যথাযথভাবে সাড়া দেয়নি। তবে, নির্বাচনে যে পরিমাণ অনিয়ম হয়েছে, তা ভোটের ফল পরিবর্তন করতে যথেষ্ট কি না, এ বিষয়ে সেনাবাহিনী কিছু বলেনি।
মিয়ানমারের সংবিধান অনুযায়ী, ‘ইউনিয়নের বিভেদ ঘটায়, জাতীয় সংহতির বিভেদ ঘটায় ও সার্বভৌম ক্ষমতা কমিয়ে আনে, এমন গুরুতর পরিস্থিতিতে দেশটির সেনাপ্রধান ক্ষমতা নিতে পারবেন। তবে, শুধুমাত্র জরুরি অবস্থা চলাকালীন তিনি ক্ষমতা নিতে পারবেন এবং সেই জরুরি অবস্থা শুধুমাত্র বেসামরিক প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করতে পারবেন।’
গত সপ্তাহে সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং সেনা কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, সংবিধান হলো “মাদার ল’ ফর অল ল’স”। কিন্তু, সেটা যদি মেনে চলা না হয়, তাহলে তা বাতিল করা প্রয়োজন। মিয়ানমারে পূর্বে ঘটা এ ধরনের ঘটনার উদাহরণও তিনি তুলে ধরেন।
২০১১ সালে মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থার উত্তরণ ঘটে। এর আগে প্রায় অর্ধশতক দেশটিতে ক্ষমতায় ছিল সেনাবাহিনী। ২০১২ সালের নির্বাচনে সু চির দল এনএলডি বিরোধী দল হলেও ২০১৫ সালের নির্বাচনে জয় লাভ করে তারা সরকারে আসে। সর্বশেষ ২০২০ সালের নভেম্বরের নির্বাচনের জয় লাভ করে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করেন সু চি।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চির ভাবমূর্তিতে অনেক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলেও রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়।