প্রকাশিত: মে ২৪, ২০২১
খুলনা উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ । এবার ঘূর্ণিঝড় টানা ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত তাণ্ডব চালাতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এ খবর ইথারে ইথারে প্রচার হওয়ার পর খুলনার পাঁচ উপজেলার দু’লাখ মানুষ আতঙ্কে আছে। ঘূর্ণিঝড়টি শক্তিশালী হয়ে খুলনা উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এ কারণে মোংলা সমুদ্রবন্দর এলাকায় এক নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় খুলনা জেলার পাঁচ উপজেলায় ১ হাজার ৪৮টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ১১৬টি মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত করা হয়েছে।
রোববার (২৩ মে) রাতে সবশেষ ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুস জানিয়েছেন, ভারতের ঊড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশের সুন্দরবনে আঘাত হানতে পারে। তবে সুন্দরবন ‘যশ’ এর আঘাত কিছুটা শিথিল করে দিতে পারে।
আবহাওয়াবিদ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রস্থলে প্রতি ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতি হতে পারে। বাংলাদেশে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। টানা ঝড়ের গতি থাকবে ১৮০ কিলোমিটার। সুন্দরবনের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে স্পষ্ট করে এখনও কিছু বলা যাচ্ছে না।
ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ এর কারণে ইতোমধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের দু’লাখ মানুষের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। মাত্র এক বছর আগে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ধকল কাটিয়ে ওঠার আগেই আবারও একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের আগমনী বার্তায় শঙ্কিত স্থানীয় ব্যক্তিরা। বিশেষ করে সংস্কারের অভাবে জীর্ণশীর্ণ অবস্থায় থাকা উপকূল রক্ষা বাঁধের করুণ অবস্থা উপকূলবাসীকে সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে।
বঙ্গপোসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে ২৬ মে ভারত-বাংলাদেশের সুন্দরবন–সংলগ্ন এলাকা অতিক্রমের বার্তা দিচ্ছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি রোববার (২৩ মে) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭১০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানায়, ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ এর কারণে সোমবার (২৪ মে) থেকে তীব্র তাপদাহ কমতে শুরু করবে। মঙ্গলবার (২৫ মে) স্বাভাবিক তাপমাত্রা বিরাজ করবে। এরপর বুধবার (২৬ মে) বিকেল নাগাদ উত্তর উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে এলাকায় আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলছেন, উত্তর আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে যে লঘুচাপ সৃষ্টির আভাস দেয়া হচ্ছে, সেটি যদি ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’-এ রূপান্তর হয়, তবে তা এক পর্যায়ে শক্তিশালী ‘সুপার সাইক্লোনে’পরিণত হতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের পুরো উপকূলকে সতর্ক থাকতে হবে।