২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার,দুপুর ২:৪৩

গতি বাড়িয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’, ২ নম্বর সতর্ক সংকেত

প্রকাশিত: মে ২৪, ২০২১

  • শেয়ার করুন

পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় “যশ” গতি বাড়িয়েছে। গত ৬ ঘণ্টায় “যশ” ঘণ্টায় ৭ কিলোমিটার বেগে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়েছে। এটি আরও উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোবে বলে ধারণা আবহাওয়াবিদদের। আগামী ১২ ঘণ্টায় শক্তি সঞ্চয় করে “যশ” প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে। তার পরের ২৪ ঘণ্টায় আরও শক্তি নিয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হয়ে উঠবে।
সোমবার রাতে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে “যশ” ভারতের ওড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এলাকার মাঝামাঝিতে আঘাত হানবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পরে “যশ” আরও উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে ২৬ মে সকালের দিকে ওড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছবে। ওই দিন দুপুরের দিকে ওড়িষ্যার পারাদ্বীপ এবং পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপের মধ্যে ওড়িষ্যার বালাসোরের কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

২৬ মে বিকাল বা সন্ধ্যায় আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় “যশ”। সেসময় পূর্ণিমা থাকায় জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর। এখন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের গতিমুখ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যার দিকে। তবে কোনো কারণে এর গতিপথ পাল্টে গেলে এটি বাংলাদেশের উপকূলে বড় ধরনের আঘাত হানতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় “যশ” ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করছে। বাতাসের গতিবেগ ৬২ কিলোমিটার। যা ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ঝড়টি আইলা বা আম্পানের মতো সুপার সাইক্লোনে রূপ নেওয়ার সম্ভাবনা নেই।

বাংলাদেশের উপকূল থেকে ৬০০ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরে পাক খেতে থাকা ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ ঘণ্টায় ৭ কিলোমিটার বেগে এগোচ্ছে।

২৬ মে ভোর নাগাদ উত্তর উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের খুলনা উপকূলের কাছ দিয়ে উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় পৌঁছাতে পারে। তবে ঝড়টি কিছুটা গতিপথ বদলেছে। এটি এখন ভারতের উড়িষ্যার দিকে যাচ্ছে। যে কোনো সময় এই ঝড়ের গতিপথ আবার পরিবর্তন হতে পারে। যদি গতিপথ বদলায় তাহলে বাংলাদেশের উপকূলের দিকেও আসতে পারে। এক্ষেত্রে ঝড়টি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও বরগুনা জেলাকে আঘাত করতে পারে বলে জানা গেছে আবহাওয়া অফিস সূত্রে।

তবে গতিপথ বদলালেও ঘূর্ণিঝড় “যশ”র সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়তে পড়বে দেশের চারটি জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও বরগুনায়। এসব জেলায় দমকা হাওয়াসহ প্রচুর বৃষ্টিপাত হতে পারে। কিছুটা ক্ষতিগ্রস্তও হতে পারে।

সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৫৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পশ্চিমে, মোংলা থেকে ৬৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুশিয়ারি সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এর আগে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত বিশেষ সতর্কবার্তায় বলা হয়, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে এবং এর আশপাশের এলাকায় সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় “যশ” দুপুর পর্যন্ত প্রায় একই এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৬৮৫ কিলোমিটার থেকে কিছুটা এগিয়ে ৬৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে। কক্সবাজার থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে এগিয়েছে। কিন্তু মোংলা ও পায়রা থেকে একই দূরত্বে আছে এখনো। মোংলা বন্দর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা বন্দর থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল বলে বিশেষ সতর্কবার্তায় জানানো হয়।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন