প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২১
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ভারতের উড়িষ্যা উপকূলের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে। এটি রোববার (০৫ ডিসেম্বর) নাগাদ ভারতের উড়িষ্যার পুরি উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এরপর এটি দুর্বল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে নিম্নচাপ অবস্থায় বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে।
শনিবার (০৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও ভারতের অবহাওয়া বিভাগ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ইতোমধ্যে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে হালকা বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আগামী দুদিন বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
শনিবার সকালে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-৭) জানানো হয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ আরও উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি শনিবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কছে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত বহাল রেখে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হচ্ছে। তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করার জন্যও বলা হলো।
বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’র কতটুকু প্রভাব পড়বে জানতে চাইলে আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ জাগো নিউজকে বলেন, ঝড়ের প্রভাবে পড়বে না। তবে এর প্রভাবে বৃষ্টি হবে, বাতাসও হতে পারে। এটি নিম্নচাপে রূপ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের দিকে আসতে পারে। আমাদের এখানে ঘূর্ণিঝড়ের বাতাস থাকবে না।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কিছু মেঘ চলে আসায় দক্ষিণাঞ্চলে ইতোমধ্যে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কাল ও পরশু (রোববার ও সোমবার) মূল বৃষ্টিটা হবে।
‘মেঘ চলে আসায়, সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করা হতে পারে। দুপুরের দিকে দেখে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে’, বলেন বজলুর রশীদ।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর বুলেটিনে জানিয়েছে, ‘জওয়াদ’ উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে বাঁক নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি বাঁক নিয়ে রোববার উড়িষ্যা উপকূলের পুরিতে পৌঁছাতে পারে এবং ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে যেতে পারে৷ এরপর এটি আরও দুর্বল হয়ে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে এগোতে পারে।
সাগরের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’র গতিপথ কিছুটা আঁকাবাঁকা। এটি একেবারে উপকূলের কাছে এসে বাঁক নেবে। তবে এটি আর শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।