প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২৫
তথ্য প্রতিবেদক : ব্যাংক চেকের মাধ্যমে প্রতারণা করে দায়ের করা মামলা থেকে রেহাই পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাগেরহাট জেলার চাঁদপুর শংকর নগর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক দেবশংকর বিশ্বাস। তিনি একই সাথে ব্যাংক কর্মকর্তা মোঃ বায়েজিদ মোল্লার শাস্তিসহ ৫টি দাবি জানিয়েছেন।
গতকাল শনিবার খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি জানান। তার অন্যান্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ভূক্তভোগীদের চেকসমূহ বায়েজিদ মোল্লার কাছ থেকে উদ্ধার, ভূক্তভোগীদের নামে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, ভাড়াটিয়া বাদী এবাদত হোসেন, শাহরিন ভানুসহ অন্য সব মিথ্যা মামলা দায়ের কারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন। বায়েজিদ মোল্লার স্থাবর অস্থাবর সম্পদ, আয়কর রিটার্ন ও ব্যাংক লেনদেন যাচাই। বায়েজিদ মোল্লাকে চাকুরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত পূর্বক বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
সম্মেলনে তিনি বলেন, রূপালী ব্যাংক কর্মকর্তা মোঃ বায়েজিদ মোল্লা ২০০০ সালে খুলনায় যোগদানের পর ঋন দেয়ার কথা বলে কয়েকজন গ্রাহকের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। ঋন দেয়ার কথা বরে অনেক গ্রাহকের কাছ থেকে বিভিন্ন ডকুমেন্টে স্বাক্ষর করে রাখতেন। পরবর্তীতে তিনি কুষ্টিয়ায় বদলী হলে ঋণগ্রহীতাদের ফাইল সাথে করে নিয়ে যান। সেখান থেকে ঋন প্রদান করতেন। কুষ্টিয়ায় থেকেই তিনি ঋণগ্রহীতাদের ডকুমেন্ট ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা ঋণ প্রদানের নামে অনিয়ম করে ২০১৬ সাময়িক বরখাস্ত হন। ঋণগ্রহীতাদের স্বাক্ষর করা শত শত চেক মর্টগেট রেখে চেকগুলো হাতিয়ার করে তিনি গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে তিনি খুলনা, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, কুষ্টিয়া, লালমনিরহাট, ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় মামলা দায়ের করেন। বায়েজিদ মোল্লার এসব অপকর্মের স্বীকার হয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা লিলিয়া খাতুন, ব্যবসায়ী এস কে এ হাসান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসলাম শিকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সকল সদস্য, উদ্ভব মহন্ত, শক্তিপদ বসু, নিধির কুমার ভক্ত, পেয়ার মণ্ডল, তৌহিদুর রহমান, সালমা জামান, মোঃ সাহাদত হোসেন শেখ, সাদিয়া হোসেন, রুপালী ব্যাংক কর্মকর্তা দীপংকর রায়, মোঃ সারোয়ার হোসেন, শ্যামল সিংহ রায় সহ নাম না জানা অসংখ্য মানুষ।
ভূতুড়ে মামলার বাদী ও স্বাক্ষীরা সবাই বায়েজিদ মোল্লার আত্মীয় স্বজন অথবা ঋণ গ্রহীতা (সূত্র ০৯/০৬/২০২৩ ইং তারিখ, চ্যানেল ২৪ “ভূতুড়ে মামলা” সার্চলাইট, পর্ব-২৩৪)। যাদেরকে প্রলোভন বা ভয় দেখিয়ে মামলা করতে বাধ্য করা হয়েছে। মামলার বাদী রহমত আলী মোল্লা বায়েজিদের আপন ভাই, কামরুল হাসান আপন শ্যালক, রাজিব মোল্লা তার ভাগ্নে, ইয়াসিন মোল্লা ভাইপো, মেহেদী হাসান আত্মীয়। এছাড়াও নাজমুল হোসেন, সুইটি ব্যাপারী, অসিম ব্যাপারী, রতন কুমার সাহা, সুব্রত মালাকার, স্বপন বিশ্বাস সহ অনেকে মামলাবাজির তালিকায় রয়েছেন। বাদীদের অনেকেই পরে আদালতে স্বীকার করেছেন যে, বায়েজিদ মোল্লার চাপে পড়ে তারা মামলা করেছিলেন। যাদের মধ্যে শরিফুল ইসলাম, সাইফুজ্জামান সুজন, মোঃ শামীম মোল্লা, বেলায়েত হোসেন মামলা প্রত্যাহার করে নেন।