২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার,রাত ৩:০৩

মাধ্যমিকে ক্লাস বাড়ছে একটি, কমবে সময় : রূপরেখা চূড়ান্ত

প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২২

  • শেয়ার করুন

মেডিক্যাল কলেজ বাদে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দু’দিন হওয়ায় নতুন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সময়সূচি চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে আগামী সপ্তাহেই জারি করে হবে প্রজ্ঞাপন। এরই মধ্যে নতুন সময়সূচির রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। আগামী রোববার তা প্রস্তাব আকারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে।

নতুন রূপরেখায় নির্দিষ্ট সময়ে সিলেবাস শেষ করতে মাধ্যমিক স্তরে আরও একটি করে ক্লাস বাড়ানোর প্রস্তাব করা হচ্ছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুসারে, বর্তমানে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসাগুলোতে প্রতিদিন ছয়টি করে ক্লাস নেওয়া হয়। এখন শনিবার ছুটি থাকায় বাকি পাঁচ দিনের প্রতিদিন অন্তত একটি করে ক্লাস বাড়ানোর প্রস্তাব করা হচ্ছে। এতে করে প্রতিটি ক্লাসের সময় কমে আসবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমোদন করলে আগামী সপ্তাহেই এই সময়সূচি কার্যকর করা হবে।

এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মশিউজ্জামান বলেন, ‘মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সংশ্নিষ্টদের সঙ্গে বসে রূপরেখা তৈরি করেছি আমরা। শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞরাও এতে ছিলেন। প্রস্তাব আকারে তা আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেব। মন্ত্রণালয়ই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’

তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবে আমরা শনিবারের বাদ যাওয়া ক্লাসগুলো সপ্তাহের বাকি পাঁচ দিনে নিতে প্রতিদিন একটি করে ক্লাসের সংখ্যা বাড়াতে বলেছি। বর্তমান শিক্ষাক্রমে প্রতিদিন ছয়টি ক্লাসের কথা বলা আছে। আমাদের প্রস্তাব সরকার অনুমোদন করলে প্রতিদিন ক্লাসের সংখ্যা দাঁড়াবে সাতটিতে।’ তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর ভিকারুন নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ রাজধানীর প্রতিটি নামিদামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই এখন প্রতিদিন সাতটি করে ক্লাস নেওয়া হয়। বেসরকারি বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগে থেকেই শনিবার বন্ধ থাকত। এখন সরকারি স্কুল-কলেজগুলো এর সঙ্গে যুক্ত হবে।

নতুন প্রস্তাবে যা আছে : নতুন প্রস্তাবে বলা হয়েছে, নবম ও দশম শ্রেণিতে সপ্তাহের প্রতিদিন একটি করে ক্লাস বাড়িয়ে পাঁচ দিনে সাতটি করে মোট ৩৫টি ক্লাস নিতে হবে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিদিন একটি করে ক্লাস বাড়িয়ে ৩৫টি করা হলেও, বৃহস্পতিবার দুই ক্লাস আগে ছুটি দিয়ে দিতে বলা হয়েছে। তাই এই তিনটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে ৩৩টি ক্লাস করতে হবে।
এনসিটিবির সদস্য মশিউজ্জামান জানান, নতুন করে একটি ক্লাস যুক্ত হওয়ায় প্রতিটির সময়ের ব্যাপ্তি আগের চেয়ে কমবে। বর্তমানে মাধ্যমিক স্তরের প্রতিটি শ্রেণিতে প্রথম পিরিয়ডের সময়সীমা ১ ঘণ্টা। তা ১০ মিনিট কমিয়ে ৫০ মিনিটে নামিয়ে আনতে প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রথম পিরিয়ডে রোল কল করতে হয় বলে অন্য ক্লাসের চেয়ে ১০ মিনিট সময় বেশি দেওয়া হয়। একইভাবে অন্য পিরিয়ডের সময়ও ৫ মিনিট করে কমিয়ে ৪৫ মিনিটে নামিয়ে আনতে বলা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার এই রূপরেখা তৈরি করতে এনসিটিবিতে এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। সেখানে এনসিটিবি ও মাউশির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।

এনসিটিবি সূত্র জানায়, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি নির্দেশ দিয়েছেন, স্কুলগুলোর বর্তমান সময়সূচি ঠিক রেখে পরিকল্পনা সাজাতে। সেজন্য বর্তমানে যে স্কুলে যে সময় ক্লাস শুরু ও শেষ হয়, নতুন প্রস্তাব পাস হলে তা ৫ থেকে ১০ মিনিট এদিক সেদিক করতে হতে পারে।

নতুন রূপরেখায় প্রস্তাব করা হয়েছে, এক শিফটের স্কুলে প্রতিদিন ২০ মিনিটের বিরতিসহ ৬ ঘণ্টা ১০ মিনিট করে পাঠদান করতে হবে। নির্দিষ্ট এই সময়সীমা ঠিক রেখে এক শিফটের স্কুলগুলো তাদের শুরু ও শেষের রুটিন নিজেরা তৈরি করে নিতে পারবে। ডাবল শিফটের স্কুলগুলোতে স্কুলিং টাইম হবে মোট ৫ ঘণ্টা। এসব স্কুলের প্রভাতী শাখা সকাল ৭টায় শুরু করে দুপুর ১২টায় শেষ করতে হবে। আর ১২টা ১৫ মিনিটে শুরু করে দিবা শাখা বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে শেষ করতে হবে।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন