প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২২
পৃথিবীর বাইরেও কি প্রাণ আছে? মহাশূন্যে তাক করা টেলিস্কোপের কোটরে চোখ রেখে নিরন্তর এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের সেই সন্ধানের পথে সম্ভবত এসে গেছে কাঙ্খিত সাফল্য। মহাকাশে অবিকল পৃথিবীর মতো একটি গ্রহ খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কানাডার মনট্রিয়ল বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বাধীন একটি আন্তর্জাতিক গবেষক দল এই বিশেষ গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন। মহাকাশ বিজ্ঞানীরা এই গ্রহের নাম রেখেছেন টিওআই-১৪৫২বি বা ‘সুপার আর্থ’।
নাসার বিজ্ঞানীরা একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, আমাদের সৌরমন্ডলে কয়েকটি উপগ্রহের সঙ্গে এই ‘সুপার আর্থ’-এর কিছুটা মিল রয়েছে। বৃহস্পতির উপগ্রহ গানিমিড, ক্যালিস্টো এবং শনির উপগ্রহ টাইটান, এনসিলাডাসের ভিতর এমন মহাসমুদ্র লুকিয়ে রয়েছে বলে মনে করা হয়। তবে সে জলরাশি রয়েছে বরফের নীচে চাপা। এই নতুন গ্রহের আয়তন পৃথিবীর আয়তনের থেকে ৭০ শতাংশ বেশি। পৃথিবীর চেয়েও গভীর সমুদ্র রয়েছে সেখানে। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হল এই গ্রহের প্রদক্ষিণ বৈশিষ্ট্য। একসঙ্গে দু’টি নক্ষত্রের চারদিকে ঘোরে গ্রহটি।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, আমাদের পৃথিবী থেকে এই গ্রহটি ১০০ আলোকবর্ষ দূরে। ‘সুপার আর্থ’ পৃথিবীর চেয়ে পাঁচ গুণ বড়। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ‘সুপার আর্থ’-এর মধ্যে রয়েছে এক বিশাল সমুদ্র। সমগ্র গ্রহের ৩০ শতাংশ জুড়ে সে সমুদ্রের বিস্তৃতি। সারা পৃথিবীতে যত পানি আছে, তা ‘সুপার আর্থ’-এর মাত্র এক শতাংশ ভরের সমান। ‘সুপার আর্থ’-এর এক বছর হয় মাত্র ১১ দিনে। কারণ একটি নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করতে এর ১১ দিন সময় লাগে। এই নক্ষত্রটি বেশ ছোট এবং গ্রহটির অনেক কাছে রয়েছে। দুইয়ের মধ্যে দূরত্ব সূর্য-শুক্র দূরত্বের সমান। তবে অন্য যে নক্ষত্রের চার দিকে এই গ্রহটি ঘোরে, সেটি অনেক দূরে। তার চার দিকে একবার ঘুরতে ‘সুপার আর্থ’-এর সময় লাগে ১ হাজার ৪০০ বছর।
তবে একশো আলোকবর্ষ দূরের এই গ্রহে সত্যিই প্রচুর পানি রয়েছে কি না, তা জানার জন্য আরও পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে একই সঙ্গে তাঁরা মনে করছেন, পানি থাকলেও এই গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ। গ্রহটি পুরোপুরি পাথুরে। জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের সাহাঘ্যে এই গ্রহকে আরও ভাল ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন বিজ্ঞানীরা। তার পরই তাঁরা বহু প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন। সূত্র : নিউজউইক