২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার,সকাল ৭:৩৩

এই প্রথম ভিনগ্রহে সন্ধান মিলল পানির

প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২২

  • শেয়ার করুন

প্রথমবারের মতো ভিনগ্রহে পানির সন্ধান পেয়েছে নাসার পাঠানো জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। এক হাজার আলোকবর্ষেরও বেশি দূরে ডব্লিউএসপি-৯৬বি নামে একটি গ্রহে এ পানির সন্ধান পাওয়া গেছে। খবর ইন্ডিপেনডেন্টের।

মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা জানায়, কোটি কোটি ডলারের জেমস ওয়েব টেলিস্কোপটি ১ হাজার ১৫০ আলোকবর্ষ দূরে ডব্লিউএএসপি–৯৬বি নামের ওই গ্যাসীয় গ্রহটিতে পানির চিহ্ন পায়।শুধু তাই নয় সেখানেও আছে সূর্যের মতো এক নক্ষত্র। আর তাকে ঘিরে প্রদক্ষিণ করছে এক দৈত্যাকার গ্যাসীয় পিণ্ড।

বুধবার (১৩ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসা এই তথ্য প্রকাশ করেছে। যেখানে প্রকাশিত হয়েছে জেমস ওয়েবের তোলা এক নির্মীয়মাণ নক্ষত্রপুঞ্জের সমাহারের ছবি। সেই ছবিতেই ধরা পড়েছে পৃথিবীর প্রতিবিম্ব বাসযোগ্য একটি গ্রহের।

নাসার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ডব্লিউএএসপি–৯৬বি নামের ওই গ্যাসীয় গ্রহটির অবস্থান এক হাজার ১৫০ আলোকবর্ষ দূরে। সূর্যের মতো একটি নক্ষত্রকে ঘিরে আবর্তন করা উষ্ণ বায়ুমণ্ডলের পৃথিবীসদৃশ ওই গ্রহে (এক্সোপ্লানেট) মেঘ ও কুয়াশা থাকার প্রমাণও মিলেছে।

বিশ্ব গণমাধ্যম হতে জানা গেছে, নাসা, ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা ও কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সির বানানো টেলিস্কোপের নাম জেমস ওয়েব। এটি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও বৃহত্তম টেলিস্কোপ। এই টেলিস্কোপটি বানানো হয়েছে দূর মহাকাশে, মহাবিশ্বের শুরুর দিকে গ্যালাক্সি সৃষ্টির সময়কে দেখার জন্য। জেমস ওয়েবের আগে হাবল টেলিস্কোপ গত দুদশকে অসংখ্য এক্সোপ্ল্যানেটকে নজরবন্দি করেছে। ২০১৩ সালে প্রথম স্পষ্ট ভাবে চিহ্নিত করেছে পানির উপস্থিতি। কিন্তু জেমস ওয়েব অভিযানে নেমেই চমক লাগিয়ে দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, শিগগির প্রাণের অনুকূল কোনো গ্রহের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে।

নাসার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ডব্লিউএএসপি-৯৬বি মিল্কিওয়েরই (আকাশগঙ্গা ছায়াপথ) একটি এক্সোপ্ল্যানেট (সৌরজগতের বাইরে থাকা কোনো গ্রহ, যা পৃথিবীর মতো কোনো এক নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে)। আমাদের এই আকাশগঙ্গা ছায়াপথে এখন পর্যন্ত ডব্লিউএএসপি-৯৬বি এর মতো পাঁচ হাজার এক্সোপ্ল্যানেট চিহ্নিত হয়েছে। এ থেকে দূরবর্তী পৃথিবীসদৃশ গ্রহটির বায়ুমণ্ডল বিশ্লেষণ করার জন্য জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের অভূতপূর্ব সক্ষমতা লক্ষ্য করা গেলো।

নাসা আরও বলেছে, “দক্ষিণ-আকাশের নক্ষত্রমণ্ডল ফিনিক্সে অবস্থিত এই গ্রহটির সঙ্গে আমাদের সৌরজগতের গ্রহগুলোর সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই। এর ভর আমাদের বৃহস্পতি গ্রহের অর্ধেকেরও কম। কিন্তু ব্যাস বৃহস্পতি থেকে ১ দশমিক ২ গুণ বেশি। আমাদের সৌরজগতের যেকোনো গ্রহের তুলনায় এটি অনেক স্ফীত। তাপমাত্রাও বসবাসের অযোগ্য, ৫৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।”

নাসার তথ্য অনুযায়ী, ডব্লিউএএসপি–৯৬বি তার সূর্যের মতো নক্ষত্রের খুব কাছাকাছি প্রদক্ষিণ করে। পৃথিবীর সময় সাড়ে তিন দিনে গ্রহটি তার নক্ষত্রকে একবার ঘুরে ফেলে। এ গ্রহের বিশাল আকার, সংক্ষিপ্ত আবর্তনকাল, স্ফীত বায়ুমণ্ডল ও দূষিত আলোর বাধা না থাকায় এর বায়ুমণ্ডল পর্যবেক্ষণ করার জন্য আদর্শ বলে বিবেচিত হয়েছে। আর এসব বৈশিষ্ট্যর জন্যেই ডব্লিউএএসপি-৯৬বিকে নিয়ে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ জন্মেছে।
সূত্র: দ্য হিন্দু

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন