২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার,সকাল ৬:৫১

চিংড়ির ভাইরাস শনাক্তে খুলনাঞ্চলে স্থাপন হচ্ছে পিসিআর ল্যাব

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৭, ২০২১

  • শেয়ার করুন

চিংড়ির ভাইরাস শনাক্তে তিনটি পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হচ্ছে। এই ল্যাবের মাধ্যমে চিংড়ি মাছে বিভিন্ন ভাইরাস আক্রান্ত হলে সেই ভাইরাস শনাক্তকরণের কাজ করা হবে। সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্টের (এসসিএমএফপি) আওতায় খুলনা মৎস্য ভবনে, সাতক্ষীরা মৎস্য খামারে ও চট্টগ্রামে এই পিসিআর ল্যাব তিনটি স্থাপন করা হবে।

সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে খুলনার গল্লামারীর মৎস্যবীজ উৎপাদন খামার প্রশিক্ষণ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এসসিএমএফপির আওতায় গণমাধ্যমে প্রচারের সুযোগ ও কলাকৌশল বিষয়ে অবহিতকরণ কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়।

কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম সাগর ও উপকূলের জলজ সম্পদ আহরণের পরিকল্পনা করেন। সরকার সমুদ্রের মৎস্য সম্পদের সংরক্ষণ ও মজুতের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। দেশের জিডিপিতে মৎস্য খাতের অবদান অনেক। তিনি বলেন, এখনো মাছ ধরতে ক্ষতিকর বিষ ও রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে মৎস্য দফতরকে নজরদারি বাড়াতে হবে।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ধ্রুব অ্যাডভারটাইজিংয়ের টিম লিডার ড. অলিউর রহমান। তিনি বলেন, সব সময় উন্নয়ন প্রকল্পগুলো নেওয়া হয় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য। আমরা মধ্যম আয়ের দেশ থেকে সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশ গড়তে চাই। সে জন্য টেকসই উন্নয়নের সুফলটা সবার কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এ জন্য মুহূর্তে অগ্রাধিকার হচ্ছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার উন্নয়ন।

কর্মশালায় জানানো হয়, এই প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য হলো উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং মৎস্য চাষ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন। সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের মজুত নিরূপণ, সংরক্ষণ, সঠিক ব্যবস্থাপনা, টেকসই আহরণ, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, চিংড়ি ক্লাস্টার উন্নয়ন এবং উপকূলীয় প্রান্তিক জেলে সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়ন করা। এই প্রকল্প খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, সাতক্ষীরা ও গোপালগঞ্জ জেলার ৭৫টি উপজেলার ৭৫০টি ইউনিয়নে চলমান রয়েছে। এর মধ্যে খুলনা অঞ্চলে ২৯টি ইউনিয়নে প্রকল্প চলমান আছে, যার মেয়াদ ২০২৫ সালে শেষ হবে।

এই প্রকল্পের কার্যক্রমগুলো হচ্ছে ফিশারিজ সার্ভিল্যান্স চেকপোস্ট নির্মাণ; ১৮টি ফিশ লান্ডিং সেন্টার/ফিশ হারবার নির্মাণ, ফিশ মার্কেট পুনর্বাসন ও আধুনিকায়ন, উৎপাদন (হারভেস্ট লস) কমানো; তিনটি ফিশ কোয়ারেন্টাইন ল্যাব প্রতিষ্ঠাকরণ; তিনটি ডায়াগনস্টিক ল্যাব প্রতিষ্ঠাকরণ; তিনটি পিসিআর ল্যাব নবায়ন/আধুনিকায়ন; একটি কোয়ারেন্টাইন রেফারেন্স ল্যাব প্রতিষ্ঠাকরণ; একটি ব্রড (মা-চিংড়ি) ম্যানেজম্যান্ট সেন্টার (বিএমসি) স্থাপন; ১২৯টি উপকূলীয় খাল (৫০০ হেক্টর) পুনর্বাসন/খনন।

কর্মশালায় আরও জানানো হয়, প্রকল্পের এ কম্পোনেন্টের কার্যক্রমে ৫৪ হাজার জেলে সুবিধা পাবেন। উপকূলীয় ৪৫০টি মৎস্য গ্রামে কমিউনিটি সার্ভিস গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করা, ১০০টি মডেল জেলে-গ্রাম প্রতিষ্ঠা করা এবং এর মধ্য থেকে ৬০ শতাংশ সুবিধাভোগীকে অর্থসহায়তা প্রদান, ১০০টি মডেল জেলে গ্রামে ফিশারিজ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তা করা, মডেল গ্রামের ১৮ হাজার যুবক-যুবতীকে ভোকেশনাল ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান, ১০০টি প্রডিউসার গ্রুপ তৈরি এবং নিবন্ধন করা, ৯০টি ইয়ুথ ফেস্টিভাল প্রোগ্রাম ও ৬টি জব-ফেয়ার আয়োজন করা এবং ৪৫টি উপজেলা জেলে ফেডারেশন প্রতিষ্ঠা করা।

সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্ট খুলনার উপপ্রকল্প পরিচালক সরোজ কুমার মিস্ত্রীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য অফিসার জিনাত আরা আহমেদ, জেলা তথ্য অফিসের পরিচালক গাজী জাকির হোসেন এবং খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম জাহিদ হোসেন। কর্মশালায় সরকারি দফতরের কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালায় প্রকল্প-সংক্রান্ত বিষয়ে উন্মুক্ত আলোচনা করা হয়।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন