২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার,রাত ৪:১১

করোনার প্রাদূর্ভাবে ভোমরা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট বন্ধ  দু’বছরে প্রায় ২২ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি

প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২১

  • শেয়ার করুন

এম জিয়াউল ইসলাম জিয়া, ভোমরা(সাতক্ষীরা): বিশ^ব্যাপী প্রাণঘাতী (কোভিড-১৯) করোনা ভাইরাস সংক্রমনের কারণে প্রায় দুই বছর যাবৎ বাংলাদেশ-ভারত পাসপোর্ট যাত্রীদের যাতায়াত বন্ধ রয়েছে সাতক্ষীরার ভোমরা ইমিগ্রেশন রুট দিয়ে। দক্ষিনবঙ্গ সাতক্ষীরার আন্তর্জাতিক রুট হিসেবে পরিচিত ভোমরা স্থল বন্দর সীমান্ত বৈধ রুট দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে কোনো পাসপোর্ট যাত্রী চলাচল করতে না পারায় সরকার দুই বছরে প্রায় ২২ কোটি টাকার ভ্রমনকর (রাজস্ব) অর্জন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ভোমরার ইমিগ্রেশন রুট দিয়ে ভ্রমন নিষেধাজ্ঞা জারি থাকায় চিকিৎসা ও ভ্রমনখাতে ব্যাপক প্রভাব পড়ায় মুখ থুবড়ে পড়েছে রাজস্ব উন্নয়ন। বৈশি^ক করোনা মহামারির প্রভাব বিস্তারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক বৈধ পথে যাত্রী গমনাগমন নিষেধাজ্ঞা প্রজ্ঞাপন জারির পর ভোমরা ইমিগ্রেশন রুট দিয়ে যাত্রী চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। চলমান করোনা ভাইরাস সংক্রমন প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ভারত-বাংলাদেশ আমদানী-রপ্তানী কার্যক্রম সচল থাকলেও যাত্রী চলাচল বন্ধে সরকার প্রতিদিন ৩ লক্ষ টাকার ভ্রমনকর (রাজস্ব) অর্জন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ভোমরা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (এসআই) জাহাঙ্গীর হোসেন খাঁন সাংবাদিকদের জানান, ভোমরা ইমিগ্রেশন রুট দিয়ে প্রতিদিন ৬শ থেকে ৭শ পাসপোর্ট যাত্রী গমনাগমন করত। যাদের প্রতি পাসপোর্ট যাত্রীর ৫শ টাকা ভ্রমনকর হিসেবে প্রতিদিন ৩ লক্ষ টাকা ভ্রমনকর হিসেবে প্রতি মাসে ৯০ লক্ষ টাকা ভ্রমনকর অর্জন করতে সক্ষম হতো সরকার। এছাড়া হিসাব অনুযায়ী বছরে ১০ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা ভ্রমনকর আদায়ে দুই বছরে এর পরিমান দাঁড়ায় প্রায় ২২ কোটি টাকা। ফলে বৈশি^ক মহামারী করোনার দূর্যোগপ্রবনকালে যাত্রী চলাচল বন্ধ থাকায় সরকার দু’বছরে প্রায় ২২ কোটি টাকা রাজস্ব (ভ্রমনকর) অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। করোনার প্রাদুর্ভাবে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ভোমরা ইমিগ্রেশন রুট দিয়ে যাত্রী চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় কোনো রাজস্ব (ভ্রমনকর) আদায় করতে পারেনি সরকার। তবে এ সময় ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে আটকে থাকা ৬৭৩ জন যাত্রীকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়। চলতি অর্থবছর ২০২১-২০২২ দেড় মাস পার হলেও এখনো পর্যন্ত ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে বন্ধ রয়েছে যাত্রী চলাচল। ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের উপ-পরিদর্শক (এএসআই) জাহিদ হোসেন জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় ভোমরা ইমিগ্রেশন দিয়ে প্রতিবছর চিকিৎসা, ব্যবসা, শিক্ষা আর ভ্রমনে ২ লক্ষাধিক পাসপোর্ট যাত্রী ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে চলাচল করে থাকে। যা থেকে বছরে সরকারের প্রায় ১০ কোটির অধিক রাজস্ব আসে। কিন্তু গেলো বছর করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে প্রতিবেশী দেশ ভারত ও বাংলাদেশে। ভয়াবহ এ ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধে গতবছরের ১৩ই মার্চ ভারত সরকার ভ্রমন নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। ফলে বাংলাদেশীদের ভারত যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসায় ভ্রমন নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে স্বল্পপরিসরে মেডিকেল ও বিজনেস ভিসা চালু করলেও খোলা হয়নি ভোমরা ইমিগ্রেশন রুট। বর্তমানে শর্তসাপেক্ষে শুধুমাত্র মূমুর্ষু রোগীদের জন্য সীমিত পরিসরে মেডিকেল ভিসা চালু রয়েছে। তবে এসব মূমুর্ষু রোগীরা ভোমরা ইমিগ্রেশন রুট দিয়ে যেতে পারছেন না। ভোমরা কাষ্টমসের সহকারী কমিশনার আমীর মামুন জানান, প্রাণঘাতী করোনার বিরুপ প্রভাবে প্রায় দুই বছর ধরে এ স্থলবন্দর দিয়ে পাসপোর্ট যাত্রীদের চলাচল বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাত এ স্থলবন্দর দিয়ে যাত্রী চলাচল শুরু হবে সেই বিষয়ে এখনো সরকারের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেষনা আসেনি। তবে যাত্রী চলাচল বন্ধ থাকায় প্রায় দুই বছরে ২১ থেকে ২২ কোটি টাকা রাজস্ব (ভ্রমনকর) অর্জন থেকে বঞ্চিত হয়েছে সরকার।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন