২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার,রাত ৪:৫৩

খুলনায় করোনায় ও উপসর্গে আরও ৬ জনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ১০৫

প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২০

  • শেয়ার করুন

গত ২৪ ঘন্টায় খুলনা মেডিকেল কলেজের (খুমেক) পিসিআর ল্যাবে ১০৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে ১০৫ জনই খুলনার। এছাড়াও য‌শোরের ১ সাতক্ষীরার ২ জন এবং মাগুরার ১জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া করোনায় একজনের ও করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। গত সোমবার মধ্যরাত থেকে আজ মঙ্গলবার (১৪জুলাই) দুপুর পর্যন্ত এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় খুলনা মেডিকেল কলেজের (খুমেক) পিসিআর ল্যাব ও খুলনা সিভিল সার্জনের দপ্তর থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

খুমেকের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ জানান মঙ্গলবার পিসিআর ল্যাবে ২৮২ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। এতে খুলনা নমুনা ছিল ২৪০টি। মোট পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে ১০৯ টি। যার মধ্যে ১০৫ জনই খুলনা জেলার। খুলনা ছাড়াও য‌শোরের ১ জন, সাতক্ষীরার ২ জন এবং মাগুরার ১ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।

খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) করোনা ওয়ার্ডের মুখপাত্র ডা. মিজানুর রহমান জানান, গত সোমবার রাত সোয়া ১২টার দিকে নগরীর মহেশ্বরপাশা এলাকার মোহাম্মদ আলী (৫৮) করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গত ১৩ জুলাই দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন।

এছাড়া নগরীর খালিশপুর থানার নয়াবাটি এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হালিম (৩৭) কয়েকদিন ধরে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। গতকাল সোমবার তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা সাসপেকটেড ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় তার মৃত্যু হয়।

এদিকে, সোমবার রাতে খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খুরশিদা আক্তার (৫৬) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়। তিনি নগরীর রামচন্দ্র দাস লেনের মোল্লা আলিম হোসেনের স্ত্রী।

অপরদিকে, সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মতিয়ার (৪৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়। তিনি করোনার উপসর্গ নিয়ে সোমবার রাতে করোনা আাইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলার মহাদেবপুর এলাকার বাসিন্দা।

একই রাতে খুমেক হাসপাতালে করোনা উপসর্গে মৃত্যু হয় যশোর শহরের ষষ্ঠীতলা পাড়ার দিলীপ রায়ের (৬৪)। তিনি জ্বর ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে গত ১৩ জুলাই বিকালে খুমেক হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন। করোনা পরীক্ষার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

অপরদিকে খুলনার কর আইনজীবী সদস্য এবং পাইকগাছা আইনজীবী সমিতির সদস্য এ্যাড. আব্দুল কাদির করোনা উপসর্গ নিয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা গেছেন(ইন্নানিল্লাহি………..রাজিউন)। দীর্ঘদিন ধরে তিনি জ্বর, শ্বাস কষ্ট ও কিডনী সমস্যা জনিত রোগে ভুগছিলেন। ঢাকার কুর্নিটোলা হাসপাতালে মঙ্গলবার ভোর ৫টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ্যাড. আব্দুল
কাদির ইতোপূর্বে খুলনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পাইকগাছা জোনাল শাখার পরিচালক ছিলেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও শোকাহত পরিবারের প্রতি
সমবেদনা জানিয়েছেন পাইকগাছা আইনজীবী সমিতি।

খুলনা সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়:
নতুন ১০৫ জন নিয়ে খুলনায় করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৩০১ জনে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত মোট আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ১১৩০ জন, নারী ৯৬৬ জন। অর্থাৎ ৭০ শতাংশই পুরুষ ও নারী ৩০ শতাংশ। মোট আক্রান্তের মধ্যে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১১৬৮ জন, মারা গেছেন ৪৮ জন। আর বেশিরভাগ আক্রান্ত হয়েছে খুলনা মহানগরীতে প্রায় ২৫৭৮ জন। আর উপজেলার মধ্যে দাকোপে ৬১ জন, বটিয়াঘাটায় ৩০ জন, রূপসায় ১৩১ জন, তেরখাদায় ৩৫ জন, দিঘলিয়ায় ৭০ জন, ফুলতলায় ১৪৬ জন, ডুমুরিয়ায় ৬৭ জন, পাইকগাছায় ৬০ জন, কয়রায় ১৮ জন। অর্থাৎ ফুলতলা উপজেলায় সর্বোচ্চ আর কয়রা উপজেলায় সর্বনিম্ন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। আর আক্রান্তদের মধ্যে ৮১ শতাংশই মহানগরীর আর বাকী ১৯ শতাংশ নয় উপজেলায়।

উল্লেখ্য, খুলনায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ১৩ এপ্রিল। নগরীর করিমনগর এলাকার অবসর প্রাপ্ত ব্যাংকার আজিজুর রহমান।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন