৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার,বিকাল ৫:০৭

গরীব অসহায়দের চাল পশুর নদে, ক্ষতিপূরণ দেবে ঠিকাদার

প্রকাশিত: এপ্রিল ১, ২০২৪

  • শেয়ার করুন

আবুল হাসান, মোংলা : ছয় হাজার বস্তা সরকারি চাল নিয়ে মোংলার পশুর নদে ডুবে যাওয়া বাল্কহেড থেকে চাল উত্তোলন শুরু হয়েছে। সোমবার (১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে স্থানীয় ডুবোরীর মাধ্যমে এই উত্তোলনের কাজ শুরু করে সোনারগাঁও শিপিং নামে চাল পরিবহনে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।

তবে চাল ভর্তি বাল্কহেড ডুবে গেলেও চুক্তি অনুযায়ী সরকারি এই চালের সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে। একই সাথে পানিতে ডুবে যাওয়া এই চাল কোনওভাবে মোংলা ঢোকানোর চেষ্টা করা হলেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান আঞ্চলিক খাদ্য গুদাম খুলনার খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চৌধুরী।

তিনি বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে গরীব ও অসহায়দের জন্য মোংলা খাদ্য গুদামে ৩০০ টন চাল মজুদ করার লক্ষ্যে গত ২৬ মার্চ খুলনার মানিকতলার মহেশ্বরপাশা সিএসডি (সেন্ট্রাল ষ্টোরেজ) থেকে ১২৫ টন চাল মোংলায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তাদের নিবন্ধিত পরিবহন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স আব্দুর রশিদ এন্টারপ্রাইজ এবং সোনারগাঁও শিপিং এই চাল পৌঁছে দেয়। বাকি ১৭৫ টন চাল নিয়ে ‘এমভি সাফিয়া’ বাল্কহেড জাহাজ সোনারগাঁও শিপিং নামের পরিবহন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রবিবার (৩১ মার্চ) ভোরে খুলনার মানিকতলাস্থ মহেশ্বরপাশা সিএসডি (সেন্ট্রাল ষ্টোরেজ) ঘাট থেকে ছেড়ে যায়। পথিমধ্যে ওইদিন দুপুরের পর মোংলার পশুর নদের ত্রিমোহনায় দূর্ঘটনার শিকার হলে ১৭৫ টনের ছয় হাজার বস্তা চাল নিয়ে এমভি সাফিয়া নৌযানটি ডুবে যাওয়ার খবর জানতে পারেন তারা।

তবে চুক্তি অনুযায়ী একই মানের এই ছয় হাজার বস্তা চালই তাদের সরকারি গোডাউনে পৌঁছে দিতে হবে। এক্ষেত্রে চাল পরিবহনের সময় সবধরনের দূর্ঘটনার দায়দায়িত্ব ওই পরিবহন ঠিকাদারকে নিতে হবে উল্লেখ রেখে তাদের কাছ থেকে জামানত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া যেকোন দূর্ঘটনার ৪৫ দিনের মধ্যেই একই মানের চাল তাদের গোডাউনে শতভাগ পৌঁছে দিতে হবে বলেও জানান আঞ্চলিক খাদ্য গুদাম খুলনার খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চৌধুরী।

এদিকে সরকারি চাল পরিবহনের ক্ষেত্রে বাল্কহেড (এক সুকান বিশিষ্ট) জাহাজ ব্যবহারে কতটা ঝুঁকিমুক্ত তা জানতে খুলনা আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের কন্ট্রোলার মুভমেন্ট মশিয়ার রহমান বলেন, ‘চাল পরিবহনের ক্ষেত্রে বাল্কহেড (এক সুকান বিশিষ্ট) জাহাজ ব্যবহার করা যাবে কিনা এই মূহুর্তে বলতে পারবো না, তবে চাল পরিবহনে ধারন ক্ষমতার বাইরে কোন নৌযান ব্যবহার হলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

রবিবার সোনারগাঁও শিপিং তাদের চাল পরিবহনে ধারণ ক্ষমতার বাইরে কোন নৌযান ব্যবহার করেছে কিনা, সেটি লোড পয়েন্টে খোঁজ নিবো এবং এতে কোন গাফিলতি থাকলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

সরকারি চাল পরিবহনে গাফিলতির বিষয়ে জানতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সোনারগাঁও শিপিং এর ব্যবস্থাপক মোঃ জাকির হোসেনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

প্রসঙ্গত, গত রবিবার (৩১ মার্চ) খুলনা থেকে আসার সময় ছয় হাজার বস্তা সরকারি নিয়ে ‘এম ভি সাফিয়া’ নামে একটি বাল্কহেড জাহাজ মোংলার পশুর নদের ত্রি মোহনায় ডুবে যায়। ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে গরীব অসহায়দের জন্য মোংলা খাদ্য গুদামে এই চাল মজুদ করার কথা ছিলো।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন