২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার,রাত ১০:২৩

রূপসায় দুর্বৃত্তদের হামলা, মন্দির ও বাড়িঘর ভাঙচুর

প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২১

  • শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোটার: খুলনার রূপসা উপজেলার শিয়ালি গ্রামে চারটি মন্দির, ছয়টি দোকান এবং দুই বাড়িতে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, শেখপুরা, বামনডাঙ্গা এবং চাঁদপুর এলাকার শতাধিক যুবক সংঘবদ্ধভাবে শনিবার সন্ধ্যায় শিয়ালি মহাশ্মশান মন্দিরে হামলা চালায়। তারা সেখানকার সব প্রতিমা এবং শ্মশানের যাবতীয় উপকরণ ভাঙচুর করে। এরপর তারা শিয়ালি পূর্বপাড়া এলাকায় হামলা চালায়। এসময় পূর্বপাড়ার হরি মন্দির, শিয়ালি পূর্বপাড়া দূর্গা মন্দির এবং শিবপদ ধরের গোবিন্দ মন্দিরের সব প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়।
দুর্বৃত্তরা শিবপদ ধরের বাড়িতেও হামলা চালায়। এরপর হামলাকারীরা বলাই মল্লিকের দোকান ও বাড়ি, অনির্বাণ হীরার চায়ের দোকান, প্রিতম মজুমদারের মেশিনারিজের দোকান, গনেশ মল্লিকের ওষুধের দোকান, শ্রীবাস মল্লিকের মুদি দোকান এবং সৌরভ মল্লিকের মুদি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়া তাছনিম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) খান মাসুম বিল্লাহ, রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরদার মোশাররফ হোসেন, ইউপি চেয়ারম্যান সাধন অধিকারী, পূজা উদযাপন পরিষদ রূপসা উপজেলার সভাপতি শক্তিপদ বসু, সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ গোপাল সেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরদার মোশাররফ হোসেন বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সক্রিয় আছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পূজা উদযাপন পরিষদ রূপসা উপজেলার সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ গোপাল সেন বলেন, হামলায় চারটি মন্দিরের ১০টি প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে। এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তৎপরতা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ৬ আগস্ট রাতে হিন্দু সম্প্রদায়ের নামসংকীর্তনে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র এ হামলার ঘটনা ঘটে। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ইমামের ওপর কোনও হামলা করেনি।
শিয়ালি পুরাতন জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা নাজিম উদ্দিন বলেন, ৬ আগস্ট এশার নামাজ চলাকালে হিন্দু সম্প্রদায়ের পুরুষ ও নারী বাদ্যযন্ত্র নিয়ে মসজিদের সামনে গানবাজনা শুরু করেন। এ অবস্থায় বের হয়ে নামাজের সময় তাদের শব্দ না করার জন্য অনুরোধ করি। তখন এক হিন্দু ব্যক্তি আমাকে ধাক্কা দেন। এতে মুসল্লি ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। রাতেই সে ঘটনা শেষ হয়। তবে ৭ আগস্টের কোনও ঘটনা সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ৬ আগস্ট রাতে শিয়ালি গ্রামের কয়েকজন পুরুষ ও নারী নামকীর্ত্তন করতে করতে শিয়ালি শ্মশান মন্দিরের দিকে যাচ্ছিলেন। এশার নামাজের সময় তারা শিয়ালি জামে মসজিদ এলাকায় পৌঁছান। এ অবস্থায় ইমাম বের হয়ে তাদের নামাজের সময় বাদ্যযন্ত্র বন্ধ করতে বলেন। এ ঘটনাকে ঘিরে দুই পক্ষের মধ্যে তাৎক্ষণিক বাগবিতণ্ডা হয়। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন