২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার,রাত ১:০৫

যশোর শিক্ষা বোর্ডের আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২১

  • শেয়ার করুন

চেক জালিয়াতির মাধ্যমে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে অভিযোগ তদন্তে শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক কে এম রব্বানিকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন যশোর শিক্ষা বোর্ডের অডিট কর্মকর্তা আবদুস সালাম।

তিনি জানান, ২০২০-২১ অর্থবছরের বিভিন্ন মালামাল কেনার জন্য ১০ হাজার ৩৬ টাকার ৯টি চেক ইস্যু করা হয়। অর্থাৎ ৯০ হাজার ৩২৪ টাকা বরাদ্দ করা হয়।

তবে ব্যাংক স্টেটমেন্টের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা যায় যশোরের ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং সাতটি ও শাহী লাল স্টোর দুটি চেকের মাধ্যমে বোর্ডের ২ কোটি ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ১০ টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। ২ কোটি ৪৯ লাখ ৫৩ হাজার ৬৫৬ টাকার হিসাব পাওয়া যায়নি।

চেকের মুরি বইয়ের (গ্রাহকের কাছে থাকা চেকের অংশ) সঙ্গে বৃহস্পতিবার ব্যাংকের স্টেটমেন্ট মেলানোর সময় এই জালিয়াতি ধরা পড়ে বলে জানান আব্দুস সালাম।

এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংক শিক্ষা বোর্ড শাখার ব্যবস্থাপক এস এম শাহিদুর রেজা বলেন, ‘ঢাকার ফকিরাপুলের ভেনার্স প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের চেকের উল্লিখিত অ্যামাউন্ট ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক যশোর শাখার ক্লিয়ারিং চেকের মাধ্যমে তুলে নেয়া হয়েছে।’

শিক্ষা বোর্ডের সচিব এ এম এইচ আলী রেজা বলেন, ‘কার্যাদেশ অনুযায়ী মালপত্র কিনেছি। কিন্তু সোনালী ব্যাংক থেকে পরিশোধিত অর্থের বিপরীতে আমাদের নথিতে কোনো বিল ভাউচার জমা নেই। ভেনার্স প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের আগে আমাদের কিছু মালপত্র দিলেও শাহী লাল স্টোরের সঙ্গে কোনো লেনদেন হয়নি।’

যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু বলেন, ‘এই জালিয়াতির সঙ্গে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান সরাসরি জড়িত। আপনারা সিসিটিভির ফুটেজ দেখেন। চেয়ারম্যান রাত পর্যন্ত ভেনার্স প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের মালিকের সঙ্গে সব সময় বসে থাকেন।’

যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মোল্লা আমীর হোসেন বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানের চেক প্রিন্ট করা। সেখানে হাতে লেখার সুযোগ নেই। ধারণা করা হচ্ছে, জালিয়াতি করে ভুয়া চেকের মাধ্যমে এসব টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা থানায় জিডি করেছি। পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটির রিপোর্ট আসার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

শিক্ষা বোর্ডের কর্মচারীদের করা অভিযোগের বিষয়ে মোল্লা আমীর বলেন, ‘তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনেই জানা যাবে আসল অপরাধী কে। বিস্তারিত আর কিছু এখন বলতে পারছি না।’

দুর্নীতি দমন কমিশন যশোর কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত বলেন, ‘বিষয়টি আমরা শুনেছি। রোববার সব নথি দেখা হবে। সরকারের টাকা আত্মসাতের সঙ্গে যারাই জড়িত হোক না কেন, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন