১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার,রাত ১২:১৫

জ্বলে উঠলেন মাহমুদউল্লাহ, হ্যাটট্রিক জয় খুলনার

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২০

  • শেয়ার করুন

শুরুটা ভালো করেছিলেন দুই ওপেনার জাকির হাসান ও জহুরুল ইসলাম অমি। তারা ফিরে যাওয়ার পর আশা জাগান ইমরুল কায়েস, পারেননি ইনিংস বড় করতে। আরও একবার হতাশ করেন সাকিব আল হাসান। ঠিক এ সময়ই জ্বলে উঠলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার দায়িত্বশীল ঝড়ো ব্যাটিংয়ে টানা তৃতীয় জয় পেল জেমকন খুলনা।

একটি ফুল টসকে আম্পায়াররা ‘নো বল’ না ডাকায় সে কী উত্তেজিত মাহমুদউল্লাহ! লেগ আম্পায়ারের সঙ্গে কিছুক্ষণ তর্ক শেষে মূল আম্পায়ারের সঙ্গেও করলেন আলোচনা। অথচ খুব গুরুত্বপূর্ণ কোনো ম্যাচ নয়। ম্যাচের শেষ দিকের ওই ঘটনায়ই ফুটে ওঠে, জিততে কতটা মরিয়া মাহমুদউল্লাহ। শেষ পর্যন্ত দলকে জিতিয়েই ফিরেছেন খুলনা অধিনায়ক।

কঠিন হয়ে পড়া ম্যাচের শেষ ভাগে গতিপথ গড়ে দিল মাহমুদউল্লাহর ১৯ বলে ৩১ রানের অপরাজিত ইনিংস। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীকে ৫ উইকেটে হারাল জেমকন খুলনা।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে রোববার ২০ ওভারে রাজশাহী তোলে ৫ উইকেটে ১৪৫ রান। খুলনার জয় ৪ বল বাকি রেখে।

খুলনার ইনিংসে ফিফটি নেই একটিও। শুরুতে জহুরুল, মাঝে ইমরুল আর শেষে মাহমুদউল্লাহর অবদানে জিতে যায় তারা।

রাজশাহীর হয়ে দারুণ এক ফিফটি করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। দুই দলের আগের লড়াইয়ের মতো এ দিনও রাজশাহী অধিনায়ক করেন ঠিক ৫৫। শেষ দিকে ঝড়ো ইনিংস খেলেন নুরুল হাসান সোহান।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা রাজশাহী দ্বিতীয় ওভারে হারায় ওপেনার আনিসুল ইসলাম ইমনকে। শান্ত শুরুতে একটু সময় নেন। পরে দারুণ সব শটে ছুটতে থাকেন। অন্য প্রান্ত থেকে সহায়তা খুব একটা পাননি।

তিনে নেমে রনি তালুকদার ১৪ রান করতে খেলেন ১৭ বল। রান বাড়ানোর জন্য ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন দেওয়া হয় যাকে, সেই মেহেদি হাসান ১৫ বলে করেন ৯।

এই সময়টায় দলকে টেনে নেওয়া, রান বাড়ানো, সবই করেন শান্ত। দলের ৮৩ রানে যখন বিদায় নিলেন অধিনায়ক, তার রানই তখন ৫৫। ৩৮ বলের ইনিংসে চার ৬টি, ছক্কা ২টি
এরপর ফজলে মাহমুদকেও অল্পতে হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় রাজশাহী। সোহান ও আসরে প্রথমবার খেলতে নামা জাকের আলির জুটি গড়ার চেষ্টায় রানের গতি যায় কমে। শেষ দিকে সোহান পুষিয়ে দেন কিছু বড় শট খেলে। ১৯তম ওভারে আল আমিনের এক ওভারেই মারেন দুটি করে ছক্কা ও চার।
তবে একটি ছক্কা মারলেও জাকের পারেননি শেষের দাবি মেটাতে। ১৯ বলে ১৫ করে অপরাজিত থাকেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান।

চোট কাটিয়ে রাজশাহীর হয়ে এ দিন প্রথমবার মাঠে নামেন মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। তবে তাকে ব্যাটিংয়ে পাঠায়নি দল। ৫ ম্যাচে ৫৭ রান করার পর এই ম্যাচে একাদশে জায়গা হারান মোহাম্মদ আশরাফুল।

খুলনার রান তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ৫৬ রান তোলেন জহুরুল ইসলাম ও জাকির হাসান। তবে রানের গতি খুব ভালো রাখতে পারেননি দুজন। বিশেষ করে জাকির পাচ্ছিলেন না ছন্দ। ২০ বলে করতে পারেন তিনি ১৯ রান।

জহুরুল শুরুতে আগ্রাসী থাকলেও পরে রানের গতি ধরে রাখতে পারেননি। তিনি বিদায় নেন ৪০ বলে ৪৩ করে।

ইমরুল কায়েস তিনে নেমে কিছুটা বাড়ান রানের গতি। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনিও। মুকিদুল ইসলামকে পুল করে ছক্কা মারার পরের বলেই অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে হারান উইকেট (২০ বলে ২৭)।

খুলনা চাপে পড়ে যায় এরপর। ব্যাটিং ব্যর্থতার শেকল এ ম্যাচেও ছিঁড়তে ব্যর্থ সাকিব আল হাসান। সাইফ উদ্দিনের বল তিনি টেনে আনেন স্টাম্পে। এই ম্যাচের ৪ রান নিয়ে ৬ ইনিংসে সাকিবের মোট রান ৫৯।

এরপর শামীম হোসেনও যখন ফিরলেন, খুলনার রান ৫ উইকেটে ১০৯। শেষ ৪ ওভারে প্রয়োজন ৩৬ রান। মাহমুদউল্লাহ সেখান থেকেই দলকে নিয়ে যান জয়ের পথে।

৯ বলে যখন প্রয়োজন ১৭ রান, সাইফের পরপর দুই বলে মাহমুদউল্লাহর দুটি বাউন্ডারিতেই লেখা হয়ে যায় ম্যাচের ভাগ্য। শেষ ওভারে কাজ শেষ করেন আরিফুল হক।

৬ ম্যাচে খুলনার এটি চতুর্থ জয়, রাজশাহী শুরুর ২ জয়ের পর হারল টানা ৪ ম্যাচ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী: ২০ ওভারে ১৪৫/৫ (শান্ত ৫৫, ইমন ১, রনি ১৪, মেহেদি ৯, ফজলে মাহমুদ ৯, সোহান ৩৭*, জাকের ১৫*; আল আমিন ৪-০-৩৫-১, শুভাগত ৩-০-২৫-২, সাকিব ৪-০-১৭-০, শহিদুল ৪-০-৪৩-১, হাসান ৪-০-১৬-০, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৪-১)।

জেমকন খুলনা: ১৯.২ ওভারে ১৪৬/৫ (জহুরুল ৪৩, জাকির ১৯, ইমরুল ২৭, সাকিব ৪, মাহমুদউল্লাহ ৩১*, শামীম ৭, আরিফুল ১০*; সাইফ ৪-০-৩৩-১, মেহেদি ৪-০-৩০-০, সানি ৪-০-২৩-১, মুকিদুল ৩.২-০-৩১-২, ফরহাদ ৪-০-২৭-১)।

ফল: জেমকন খুলনা ৫ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: মাহমুদউল্লাহ।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন