২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার,রাত ১০:৫৫

হিজবুল্লাহ মহাসচিব শহীদ হাসান নাসরুল্লাহর শাহাদাত স্মরণে খুলনায় স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত: অক্টোবর ১০, ২০২৪

  • শেয়ার করুন

তথ্য প্রতিবেদক:

হিজবুল্লাহ মহাসচিব শহীদ হাসান নাসরুল্লাহর শাহাদাত স্মরণে খুলনার কাসরে হুসাইনী ইমামবারগাহতে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফিলিস্তিনের প্রতি তার অঙ্গীকার এবং ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে তার সংগ্রামকে শ্রদ্ধা জানাতে “Stand With Palestine” খুলনা আয়োজনে এ সভায় উপস্থিত ছিলেন ধর্মীয় ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব। যারা শহীদ নাসরুল্লাহর সংগ্রামী জীবন এবং তার অবদান নিয়ে বক্তব্য রাখেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা হয়। এরপর হাদিসে কিসার পাঠ করা হয়, যেখানে ইসলামের পবিত্র শিক্ষাগুলোর উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়। পরবর্তীতে চিত্রপ্রদর্শনী করা হয়, যেখানে শহীদ নাসরুল্লাহর জীবনের বিভিন্ন অধ্যায় এবং ফিলিস্তিনের মুক্তি সংগ্রামের দৃশ্যাবলী প্রদর্শিত হয়। এই চিত্র প্রদর্শনীটি দর্শকদের মধ্যে গভীর আবেগের সঞ্চার করে।
রাত পৌনে ৮ টায় শুরু হয় মূল আলোচনা পর্ব, যেখানে বিশিষ্ট আলেম ও বক্তারা শহীদ নাসরুল্লাহর জীবন ও ইসলামী আন্দোলনের প্রতি তার অবদান নিয়ে আলোচনা করেন। বক্তারা নাসরুল্লাহর সংগ্রামের গভীরতা এবং ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্য তার অপরিসীম অবদানের প্রশংসা করেন। আলোচনা পর্বে বক্তব্য রাখেন, মাওলানা সৈয়দ রেজা আলী জায়েদী, মাওলানা আবদুল লতিফ, মাওলানা সৈয়দ সাজ্জাদ, মোঃ ইকবাল, মোঃ শাহজাহান, এজাজ মেহেদী, আওন আলী গাজী।
বক্তারা বলেন, শহীদ হাসান নাসরুল্লাহর নেতৃত্বে হিজবুল্লাহ ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্য আপোষহীনভাবে লড়াই করে গেছে, যা আজও চলমান। তার আত্মত্যাগ মুসলিম বিশ্বের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।
লেবাননের হিজবুল্লাহ মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ শাহাদাতের অমীয় সুধা পান করার মাধ্যমে নিজের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছৈ গেছেন। তিনি প্রায় ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে শহীদদের পথ ধরে অগ্রসর হয়েছেন এবং এই দীর্ঘ সময়ে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের একের পর এক বিজয় উপহার দিয়েছেন। তিনি ১৯৯২ সালে প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতৃত্বের গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০০০ সালে ইহুদিবাদীদের কবল থেকে লেবাননের মুক্তি থেকে শুরু করে ২০০৬ সালের ৩৩ দিনের যুদ্ধে ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিজয় তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে অর্জিত হয়েছে। গত প্রায় এক বছর ধরে গাজার নির্যাতিত ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে তিনিই লেবাননের প্রতিরোধ আন্দোলনকে ইসরাইল বিরোধী সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন।
সেইসঙ্গে আমরা আমাদের প্রতিরোধকামী জাতি, আমাদের ধৈর্যশীল ও মুজাহিদ জনগণ, সমগ্র মুসলিম উম্মাহ, বিশ্বের সমস্ত মুক্ত ও নিপীড়িত মানুষ এবং লেবাননের হিজবুল্লাহ মহাসচিব জনাব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহর সম্মানিত ও ধৈর্যশীল পরিবারকে অভিনন্দন জানাই। মহান আল্লাহ তাকে বায়তুল মুকাদ্দাস ও ফিলিস্তিনকে মুক্ত করার পথের একজন শহীদ হিসেবে কবুল করুন। তিনি ইমাম হুসাইনের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী জীবন পরিচালিত করে বৈরুতের দক্ষিণ উপকণ্ঠে বিশ্বাসঘাতক ইহুদিবাদীদের আগ্রাসনে ইমামের শহীদী কাফেলায় শরীক হতে সক্ষম হয়েছেন।
রাত পৌনে ১০ টায় শহীদ নাসরুল্লাহর সংগ্রামী জীবনের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এতে তার সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার লড়াইয়ের ইতিহাস তুলে ধরা হয়, যা দর্শকদের মধ্যে গভীর ভাবনা জাগায়।
অনুষ্ঠানের মাঝখানে ইসলামিক সঙ্গীত পরিবেশন করেন পিয়ার আলী, যা অনুষ্ঠানকে আরো ভাবগম্ভীর করে তোলে।
অনুষ্ঠানটি শেষ হয় শহীদ নাসরুল্লাহর আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে। সঞ্চালনা করেন সৈয়দ মোস্তফা মেহেদী। উপস্থিত সকলেই শহীদ নাসরুল্লাহর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার প্রতি নিজেদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
এই স্মরণ সভা খুলনার বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের মাঝে গভীর প্রভাব ফেলেছে এবং ইসলামী আন্দোলনের ইতিহাসের প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়িয়ে তুলেছে।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন