নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ পশুর চ্যানেলে ইনার বারে ড্রেজিং প্রকল্পের আওতায় ড্রেজিংয়ের মাটি পশুর নদী তীরবর্তী চিলা ইউনিয়নের কৃষি জমিতে ফেলার কারণে পরিবেশ বিপর্যয়ের ও স্থানীয় জনগণ তাদের পূর্বপুরুষদের রেখে যাওয়া জমা জমিতে ধান চাষ ও মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল সেই জমিতে ড্রেজিংয়ের বালু ভরাটের কারণে ভবিষ্যৎ জীবিকা হারানোর ভয় ও পরিবার পরিজন নিয়ে পথে বসতে হবে । এআশঙ্কায় এলাকাবাসী বেশ কয়েক মাস যাবত উপজেলা, জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সরকার প্রধানের দৃষ্টি আর্কষণ করে মানববন্ধন, সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেছিলো।
সর্বশেষ গত ২৩ আগষ্ট এবিষয়ে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসকের বরাবর একটি আবেদন পেশ করেন।
যার পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার (৩০ আগষ্ট) জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান চিলা ইউনিয়নের কোলাবাড়ি-সুন্দরতলা স্থানে পরিদর্শনে আসেন। এসময়ে স্থানীয় প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা, বেশ কিছু সংখ্যক জমির মালিক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময়ে স্থানীয় জনগনের পক্ষে চিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী আকবর হোসেন ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের বরাবর কয়েকটি প্রস্তাব পেশ করেন, তিনি বলেন স্থানীয় জনগণের সাথে সমন্বয় করে দেশের উন্নয়নের স্বার্থে মংলা পোর্ট যাতে সচল থাকে সে জন্য তিনি বালু ভরাটের জায়গার ব্যবস্থা করবেন এবং সেই জায়গায় ক্ষতিপূরণ প্রদান সাপেক্ষে বালু ভরাট করার জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বন্দর প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ারকে অনুরোধ করেন। তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে প্রজেক্টের বালুতে কয়েকটি আশেপাশের খাল বন্ধ হয়ে গেছে, প্রজেক্টের ট্রলি চলাচলের কারণে এলাকার রাস্তাঘাট ব্যপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। উক্ত খাল পূনঃখনন ও রাস্তা মেরামত করার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের নিকট জোরালো দাবী জানান ।নির্দিষ্ট উচ্চতার অতিরিক্ত যাতে মাটি ভরাট না করা হয় সে জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট অনুরোধ করেন।
টি,কে গ্রুপের ম্যানেজমেন্ট কো-অডিনেটর মোসলেহউদ্দিন তুহিন জানান, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ পত্রের মাধ্যমে কম্পানীকে অবগতি করেছিলেন ৫ থেকে ৬ ফিট বালু ভরাট করা হবে কিন্তু বাস্তবতায় ১৫ থেকে ২০ ফিট বালু ফেলা হয়েছে। যে কারণে কম্পানী বিপুল পরিমানে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তাই অতিরিক্ত বালু ভরাটের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।
এ সময় জেলা প্রশাসক আজিজুর রহমান প্রকল্প ইঞ্জিনিয়ার মতিউর রহমানকে বলেন, “কোন রকমের নির্দিষ্ট ডিজাইনের বাহিরে যেন মাটি ভরাট না করা হয়, আমরা স্থানীয় জনগণের স্বার্থেই এখানে দায়িত্ব ও কর্তব্যপালন করতে আসছি”। সেকথা বিবেচনায় রেখে ক্ষতি যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা প্রদান করেন । তিনি বিভিন্ন ইস্যু গুলো স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে সমাধান করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প ইঞ্জিনিয়ারকে নির্দেশনা প্রদান করেন। পরিশেষে তিনি এলাকাবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, মংলা বন্দর সচল রাখার স্বার্থে ও দেশের উন্নয়নের এটি একটি আন্তঃজার্তিক বিষয় এজন্য আপনাদের সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি ।
পরিদর্শনকালে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাগেরহটের পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শাহিনুর আলম, পশুর নদীর ইনারবার চ্যানেল প্রকল্প পরিচালক বন্দরের প্রধান প্রকৌশলী শেখ শওকত হোসেন, হারবার মাষ্টার কমান্ডার ফকরউদ্দিন, উপজেলা নির্বাহি অফিসার কমলেশ মজুমদার, সহকারি কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার রাজবংশী, টিকে গ্রুপের লেঃ কমান্ডার (অব) সহঃ মহা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইকবাল বাহার চৌধুরী, চিলা ইউপি চেয়ারম্যান গাজী আকবর হোসেন, সুন্দরবন ইউনিয়নের বেসরকারিভাবে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ইজারাদার ইকরাম হোসেন, টিকে গ্রুপের ম্যানেজমেন্ট কো-অডিনেটর মোসলেহউদ্দিন তুহিনসহ পাঁচ শতাধিক কৃষিজমি ও মৎস্য খামার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী।