প্রকাশিত: অক্টোবর ৫, ২০২৫
তথ্য প্রতিবেদক:
বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে রোববার দুপুর ১২টায় স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠাসহ পাঁচ দফা দাবিতে এক মতবিনিময় সভা ও সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি (বাসমাশিস) খুলনা অঞ্চল ও জেলা শাখার ব্যবস্থাপনায় এবং স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও এন্ট্রি পদ নবম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদের আয়োজনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিষদের খুলনা অঞ্চল কমিটির সদস্য সচিব ও সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. ওমর ফারুক। এসময় উপস্থিত ছিলেন, খুলনা অঞ্চল কমিটির আহ্বায়ক ও আঞ্চলিক উপপরিচালক (মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা) মো. কামরুজ্জামান, খুলনা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান, খুলনা জেলা কমিটির আহ্বায়ক ও খুলনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ফারুকুল ইসলাম, স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ও বাসমাশিস খুলনা অঞ্চলের সাবেক সভাপতি মমতাজ খাতুন, জেলা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মো. সাইফুজ্জামান, অঞ্চল কমিটির সদস্য (দপ্তর) মলয় কান্তি গাইন, সদস্য (অর্থ) মাসুম বিল্লাহ, সহকারী শিক্ষক তাজাম্মুল হকসহ খুলনা মহানগরীর সরকারি বিদ্যালয়ের সম্মানিত প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।
লিখিত বক্তব্যে ওমর ফারুক বলেন, ২০০৩ সালে অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিয়ার নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় শিক্ষা কমিশনের ২ নং ক্রমিকে মাধ্যমিক শিক্ষার সার্বিক ব্যবস্থাপনার জন্য একটি স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গঠনের সুপারিশ করা হয়েছিল। একইসাথে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে উপপরিচালকের সমমর্যাদা প্রদান এবং শিক্ষকদের পদোন্নতির পথ উন্মুক্ত করার কথা বলা হয়।
তিনি আরও বলেন, “২০০৩ সালের শিক্ষা কমিশন ও ২০১০ সালের শিক্ষানীতিতে মাধ্যমিকের উন্নয়নে আলাদা অধিদপ্তর গঠনের সুপারিশ থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে সরকার বিষয়টি বাস্তবায়ন করেনি।”
২০২৪ সালের সচিব কমিটির বৈঠক এবং পরবর্তী সময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংস্কার পরিকল্পনায় মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও কলেজ শিক্ষা অধিদপ্তর নামে দুটি স্বতন্ত্র অধিদপ্তর গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টা এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
তবে একটি মহল এই প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষক নেতা। তিনি বলেন, “আমরা চাই চলতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গেজেট প্রকাশ করা হোক।”
এ সময় তিনি আরও বলেন, ১৯৭৩ সালের পে-স্কেল অনুযায়ী সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক, পিটিআই ইন্সট্রাক্টর ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তারা একই গ্রেডের ছিলেন। কিন্তু এখনো সহকারী শিক্ষকরা ১০ম গ্রেডে রয়েছেন। তাই তাদের পদ নবম গ্রেডে উন্নীত করে কলেজ শিক্ষকদের মতো চার স্তরীয় একাডেমিক পদসোপান বাস্তবায়নের দাবি জানান।
এছাড়া আঞ্চলিক উপপরিচালকের প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা সংরক্ষণ, বিদ্যালয়ের শূন্য পদে নিয়োগ ও পদোন্নতি প্রদান এবং প্রায় ছয় হাজার শিক্ষকের বকেয়া সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল দ্রুত মঞ্জুরির দাবি জানানো হয়।
আরও জানান, গত ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ৬৪ জেলায় একযোগে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
এই ঘোষণার অংশ হিসেবে খুলনা প্রেসক্লাবে আজকের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষক নেতৃবৃন্দ ঘোষণা দেন, আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হলে, তারা চাকরিবিধি মেনে মানববন্ধন, বিভাগীয় শিক্ষক সমাবেশ ও জাতীয় পর্যায়ে ঢাকায় শিক্ষক মহাসমাবেশসহ আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।