প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২১
প্রকাশিত:
জিয়াউল ইসলাম জিয়া, ভোমরা(সাতক্ষীরা): দেশের বৃহত্তম বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বিভিন্নপ্রকার ফল আমদানী বাণিজ্যের এলসি(ঋণপত্র) খোলে দেশের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। দীর্ঘ তিন বছর যাবত বকেয়া আমদানী শুল্ক পরিশোধ না করায় বেনাপোল কাষ্টম হাউজের কমিশনার আমদানীকারকের বিন(বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার) লক করে দেয়। ফলে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানী বাণিজ্যের কোনো সুযোগ না থাকায় সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে কতিপয় অসাধু সিএন্ডএফ এজেন্টদের মাধ্যমে ভারত থেকে ফল আমদানীকৃত পণ্যবাহী ৮টি ট্রাক স্থলবন্দর ভোমরা পার্কিং ইয়ার্ডে প্রবেশ করায়। বেনাপোল কাষ্টম হাউজ কমিশনারের পক্ষ থেকে অনলাইন সার্ভেয়ারে আমদানীকারকদের বিন লক করে দেওয়ায় ভোমরা কাষ্টমসের সহকারী কমিশনার আমীর মাহমুদ স্থলবন্দর অভ্যন্তরে প্রবেশ করা আমদানীকৃত ফলবোঝাই ভারতীয় ৮টি ট্রাক আটক করেন। দেশের ওইসব আমদানীকারক ব্যবসায়ীরা তাদের আমদানী বাণিজ্যের বিন লক হওয়ার তথ্য দেশের বিভিন্ন স্থল ও সমুদ্রবন্দর শুল্কায়ন কার্যালয়ে অনলাইনে পৌঁছানোর খবর জানলেও সুকৌশলে ব্যাপক শুল্ক কর ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশ্যে ভোমরা বন্দর দিয়ে বিভিন্ন সিএন্ডএফ এজেন্টদের মাধ্যমে আমদানীকৃত পণ্য ছাড়ের প্রচেষ্টা করে। ভোমরা বন্দরে আমদানীকৃত পণ্য কাষ্টমস থেকে ছাড় করানোর জন্যে ছয়টি সিএন্ডএফ এজেন্টদের দায়িত্ব দেয়। এদের মধ্যে ২রা আগষ্ট ২০২১ তারিখে ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স শাহনাজ এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে দুই গাড়ি টমেটো, একই তারিখে সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স কাজী এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে দুই গাড়ি আনার, ২৮ জুলাই ২০২১ তারিখে সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স আলেয়া এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে এক গাড়ি খেঁজুর, একই তারিখে সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স আল মদিনা এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে এক গাড়ি আনার, একই তারিখে সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স রোহিত ট্রেডার্সের মাধ্যমে এক গাড়ি আনার এবং ২৮ জুলাই ২০২১ তারিখে সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স কাজী এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে এক গাড়ি আনারসহ মোট আট গাড়ি পণ্য আমদানী করে। বন্দর সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ভারত থেকে আমদানীকৃত প্রতিটি ট্রাকে ২২ থেকে ২৩ টন টমেটো, আনার ও খেজুর থাকে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড(এনবিআর) ভারত থেকে আমদানীকৃত প্রতি কেজি টমেটোর শুল্কায়ন ২৫ টাকা, প্রতি কেজি আনারের শুল্কায়ন ৪৫ টাকা এবং প্রতি কেজি খেঁজুরের শুল্কায়ন ৮ টাকা হিসাবে নির্ধারন করেছে। সে হিসাবে সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স শাহনাজ এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে আমদানীকৃত দুই ট্রাক পণ্যের পরিমান দাঁড়ায় ৪৪ টন। যার কাষ্টম শুল্কায়ন মূল্য দাঁড়ায় ১১ লক্ষ টাকা।সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স কাজী এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে আমদানীকৃত দুই ট্রাক পণ্যের পরিমান দাঁড়ায় ৪৬ টন। যার কাষ্টম শুল্কায়ন মূল্য দাঁড়ায় ২০ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স আলেয়া এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে আমদানীকৃত এক ট্রাক পণ্যের পরিমান দাঁড়ায় ২২ টন। যার কাষ্টম শুল্কায়ন মূল্য দাঁড়ায় ২ লক্ষ টাকা। সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স আল মদিনা এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে আমদানীকৃত এক ট্রাক পণ্যের পরিমান দাঁড়ায় ২২ টন। যার কাষ্টম শুল্কায়ন মূল্য দাঁড়ায় ১০ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা। সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স রোহিত ট্রেডার্সের মাধ্যমে আমদানীকৃত এক ট্রাক পণ্যের পরিমান দাঁড়ায় ২২ টন। যার কাষ্টম শুল্কায়ন মূল্য দাঁড়ায় ১০ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা এবং সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স কাজী এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে আমদানীকৃত এক ট্রাক পণ্যের পরিমান দাঁড়ায় ২২ টন। যার কাষ্টম শুল্কায়ন মূল্য দাঁড়ায় ১০ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা। এ হিসাবে শুল্কায়নের পরিমান দাঁড়ায় ৫৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। এ শুল্কায়ন কর ফাঁকি সম্পর্কে জানতে চাইলে, ভোমরা শুল্ক ও তদন্ত সার্কেলের রাজস্ব কর্মকর্তা জানান, আমদানীকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্ট যোগসাজসে বিশাল অঙ্কের সরকারী শুল্কায়ন কর ফাঁকি দেওয়ার অসৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে। ভোমরা কাষ্টমসের সহকারী কমিশনার আমীর মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, আমদানীকারক প্রতিষ্ঠানের কাছে বেনাপোল কাষ্টম হাউজ কর্তৃপক্ষ বকেয়া শুল্ক হিসাবে ১০ কোটি টাকা পায়।কিন্তু দীর্ঘ তিন বছর যাবত এই টাকা বকেয়া থাকলেও আমদানীকারকরা তা পরিশোধ করছেন না। এই কারণে বেনাপোল কাষ্টম কর্তৃপক্ষ পঁচিশটি লাইসেন্স ও তাদের কার্যক্রম সীলড করে রেখেছে। তিনি আরো বলেন, পাওনার বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তা আটকে থাকবে। তাছাড়া এসব পণ্য নষ্ট হওয়ার আগেই শুল্কায়ন ব্যবস্থা নিষ্পত্তি না হলে আইন অনুযায়ী আমদানীকৃত পণ্য নিলামে বিক্রি করা হতে পারে। সহকারী কমিশনার আরো জানান, যেসব আমদানীকারকদের বিন(বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার) লক করা হয়েছে সেগুলো হলো-বিকে ট্রেডার্স, খান এন্টারপ্রাইজ, জাহান ট্রেডিং, মাসুম এন্টারপ্রাইজ, মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজ, প্রমি এন্টারপ্রাইজ, রাহা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, এ্যানি এন্টারপ্রাইজ, দাসবেদাস এন্টারপ্রাইজ, ফরিদা এন্টারপ্রাইজ, কেপি এন্টারপ্রাইজ, এনপি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, পিএইচকে ট্রেডার্স, কে হাসান ট্রেডিং, সিদ্ধার্ত এন্টারপ্রাইজ, আল্লার দান ফল ভেÐর, পর্ব এন্টারপ্রাইজ, আর আর ব্রাদার্স, রিফাত এন্টারপ্রাইজ, সোনালী ট্রেড, উড অ্যাপেল, আরতি ইনটেক্স, এআর ট্রেডার্স ও পারভেজ ট্রেডিং। এসব আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান তাদের বকেয়া শুল্ক পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো বন্দর দিে