৯
মিলন হোসেন বেনাপোল।
রাজস্ব আয়ের দিক দিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের পরেই বেনাপোল স্থলবন্দরের অবস্থান হলেও, দীর্ঘ ৯ বছর ধরে রাজস্ব ঘাটতির কবলে স্থলবন্দরটি। গেল অর্থবছরেও ঘাটতি হয়েছে ২ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৈধ সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত হয়ে তারা এ পথে বাণিজ্য কমিয়েছেন; রয়েছে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থানার অভিযোগও।
বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে ভারতের প্রধান বাণিজ্যিক শহর কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮৪
কিলোমিটার। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়াতে এপথে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি। কিন্তু অন্য বন্দরে ব্যবসায়ীরা যে সুবিধা পাচ্ছেন, বেনাপোল বন্দরে তা নেই। আছে নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা। আছে ইচ্ছেমতো শুল্কায়নের অভিযোগ। এতে লোকসানে পড়ে ব্যবসায়ীরা যাচ্ছেন অন্য বন্দরে। ফলে গেল কয়েক বছর ধরে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আসছে না।
এ বিষয়ে এক আমদানিকারক বলেন, এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কাস্টমসের সঙ্গে যোগসাজশ করে ট্যাক্স ফাঁকি দিচ্ছেন। অথচ আমরা নিয়ম মেনে আমদানি করায় আমাদের ওপর শুল্কের বোঝা বেশি চাপছে।অপর এক আমদানিকারক বলেন, আমরা চট্টগ্রাম বন্দর থেকে যে পণ্য নিয়ে আসি চার ডলারে, বেনাপোল দিয়ে আনতে গেলে সেটি ৬ ডলার খরচ পড়ছে। সব বন্দরে সমান শুল্ক আরোপের দাবি জানান এই ব্যবসায়ী।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ সালে ২ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে। এছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২০৩ কোটি টাকা, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৪৫২ কোটি টাকা এবং ২০১১-১২ ১৯৪ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি ছিল।
এদিকে বেনাপোল কাস্টমসে খাদ্যদ্রবের মান পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরি সুবিধা না থাকায় বাইরে থেকে মান পরীক্ষা করাতে মাসের পর মাস লেগে যায়। এতে খরচ বাড়ে, নষ্ট হয় পণ্যের গুণগত মান। আরও আছে কঠোর বিধিনিষেধের বেড়াজাল।
সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী মতিয়ার রহমান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে খাদ্যদ্রব্যের চালান দ্রুত ছেড়ে দেওয়া হয় কারণ সেখানে পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। এই সুবিধা বেনাপোলেও চালু করতে হবে।তাছাড়া বন্দরের জায়গা এবং রাস্তা সংকটেও ব্যবসায়ীরা চাহিদামত পণ্য আমদানি করতে পারছেন না।
এ বিষয়ে বেনাপোল কাস্টম হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার ড. নিয়ামুল ইসলাম বলেন, দেশের বাণিজ্যিক পণ্য আমদানির পাশাপাশি অবকাঠামো উন্নয়নের প্রচুর পণ্য আসছে। এই চাপ নেওয়ার মতো ক্ষমতা বন্দরের নেই।তবে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। কাজ শেষ হলে বাণিজ্যে গতি ফিরবে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল বলেন, নতুন টার্মিনাল নির্মাণ, সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ নিরাপত্তা বৃদ্ধির কাজ চলমান আছে। এসব কাজ শেষ হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।চলতি অর্থবছরে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা। আর গেল অর্থবছরে এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পণ্য আমদানি হয়েছে ২ লাখ ৭৪ হাজার ৭২৭ মেট্রিক টন।
উপদেষ্টা সম্পাদকঃ এস এম নজরুল ইসলাম
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ শেখ তৌহিদুল ইসলাম
বার্তা সম্পাদকঃ মো: হুমায়ুন কবীর
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৩১ বি কে রায় রোড,খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ বাড়ি নং-২৮, রোড নং-১৪, সোনাডাঙ্গা আ/এ (২য় ফেজ) খুলনা থেকে প্রকাশিত ও দেশ প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন, ৪০ সিমেট্রি রোড থেকে মুদ্রিত।
যোগাযোগঃ ০১৭১৩-৪২৫৪৬২
ফোন : ০২-৪৭৭৭২১০০৫, ০২-৪৭৭৭২১৩৮৩
ই-মেইলঃ dailytathaya@gmail.com
কপিরাইট © দৈনিক তথ্য । সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত