২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার,রাত ২:৪১

শিক্ষার্থীদের টানে আন্দোলন গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন শাহিন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৪

  • শেয়ার করুন

আবুল হাসান, মোংলা : ছেলে আন্দোলনে, তাই বসে থাকতে পারেননি বাবা। ছেলে ও শিক্ষার্থীদের টানে আন্দোলন গিয়ে শেষমেশ প্রাণ গেলো বাবার। নিহত শহীদ শাহিন হাওলাদারের লাশের জানাজা শেষে তার বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) গ্রামে বাড়ীতে দাফন করা হয়েছে। সরকারের কাছে পরিবারের দাবী অন্তত একটি চাকুরীর ব্যবস্থা করে দেয়ার। নিহত শাহীন হাওলাদার (৪৫) বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের আব্দুস সোবহানের ছেলে। তিনি রাজধানীর দক্ষিণ গোড়ান এলাকায় পরিবার নিয়ে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন।

গত ২৫আগস্ট ঢাকায় সচিবালয় ঘেরাও করে আন্দোলন করে আনসার সদস্যরা। সেখানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে যান রাজধানীর কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থী হাসান আহমেদ বিশাল। ঘটনার দিন বিকেলে ছেলে বিশাল আন্দোলনে যাওয়ার খবরে বাবা শাহিন হাওলাদার আর ঘরে বসে থাকতে পারেননি। রাতে তিনিও ছুটে যান ওই আন্দোলনে। গিয়ে দেখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর উপর আনসার বাহিনীর হামলা চলছে। তখন তিনি তা ঠেকাতে গেলে তাকেও মারাত্মকভাবে আহত করা হয়। আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হওয়া শাহিন বুধবার (৪সেপ্টেম্বর) সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে ওই দিনই তার লাশ নেয়া হয় গ্রামের বাড়ী মোংলার সুন্দরবন ইউনিয়নের বাজিকরখন্ডে। সেখানে বৃহস্পতিবার সকালে জানাজা শেষে দাফন করা হয়।

বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে নিহতের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, লাশ নেয়ার পর কান্নায় ভারী হয়ে উঠে ওই এলাকা। ছুটে আসেন শতশত মানুষ। বিএনপি সমর্থিত শাহিন পরিবার আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন। বিএনপির কর্মী হওয়ার তার জানাজায় শরীক হন বিএনপি ও জামায়াত নেতারা। আসেন পুলিশ প্রশাসনও।

নিহত শাহীন হাওলাদারের ছেলে ঢাকার কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থী হাসান আহমেদ এদিন বলেন, সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ সংগ্রহের কাজ করছিলেন তিনি। পরে রাতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সচিবালয়ের সামনে যান। তাঁর বাবা রেন্ট-এ-কারে গাড়ি চালান। ছেলে সচিবালয়ের সামনে আছেন জেনে তার বাবা তাঁকে নিতে সেখানে আসেন। এ সময়ে তাঁর বাবা সংঘর্ষের মাঝে পড়েন। আনসারদের মারধরে তিনি আহত হন। সেদিন রাতে তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

ছেলে হাসান আহমেদ আরও বলেন, তাঁদের পরিবারের একমাত্র আয়ের উপার্জনকারী ছিলেন তাঁর বাবা। এখন তিনি আর পৃথিবীতে নাই। বর্তমান সরকারের কাছে একটি সরকারি চাকরী দাবি তার। যদিও শহীদ শাহিনের পরিবারকে একটি চাকুরীর ব্যবস্থা করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা বলেও জানান তিনি। একই সাথে যে আনসার সদস্যরা শাহিনকে হত্যা করেছেন তাদের বিচারের দাবী জানিয়েছেন পরিবারটি।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন