প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২২
প্রকাশিত:
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা বলেছেন, রাশিয়া থেকে ভারত সস্তায় যে ক্রুড অয়েল কিনছে তার মধ্যে ইউক্রেনীয় নাগরিকদের ‘রক্ত’ মিশ্রিত আছে। দিল্লির কাছ থেকে ‘অসহযোগিতা’ নয়, বরং সহযোগিতা প্রত্যাশা করি আমরা।
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের সাংবাদিকদের সঙ্গে ভাচুর্য়াল আলোচনায় তিনি এই কথা বলেছেন। কুলেবা বলেন, উচ্চ ছাড়ে যখন ভারত রাশিয়ার তেল কিনছে তখন দিল্লিকে বুঝতে হবে যে, ইউক্রেনবাসীর ‘রক্ত’ দিয়ে তার দাম পরিশোধ করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, রাশিয়া আগ্রাসন চালিয়ে ইউক্রেনীয়দের হত্যা করছে, নির্যাতন করছে, নারীদের ধর্ষণ করছে, শহর-বন্দর-স্হাপনা ধ্বংস করছে। রাশিয়ার যেখানে তিরস্কার পাওয়া উচিত, সেখানে পুরস্কার পেলে তারা আরো উত্সাহিত হবে।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একটি গণতান্ত্রিক দেশের উচিত অন্য গণতান্ত্রিক দেশগুলোর পাশে দাঁড়ানো। রাশিয়ার নিকট থেকে ভারত ক্রুড অয়েল কিনছে আমরা তাতে অবাক হইনি। কিন্তু আমরা প্রত্যাশা করতে পারি যে, দিল্লি রাশিয়াকে এভাবে সুযোগ ধরতে দেবে না। তিনি আরো বলেন, ইতিহাসে দেখা গেছে, যখন দুই বা ততধিক দেশ যুদ্ধে জড়িয়ে দুর্দশায় পতিত হয়, তখন অনেকে সেই যুদ্ধ থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হবার চেষ্টা করে।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের বিরুদ্ধে অসন্েতাষ প্রকাশ করলেও তিনি বলেন, আমরা এখনো প্রত্যাশী যে, ইউক্রেনের সঙ্গে দিল্লি চমত্কার একটি সম্পর্ক তৈরিতে এগিয়ে আসবে। বর্তমান পরিস্হিতিতে তারা ইউক্রেনের জনগণের পাশে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, যুদ্ধ শুরুর পর আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের নিরাপদে স্বদেশে ফেরার ব্যবস্হা করেছি। ভারতীয় শিক্ষার্থীরা আমাদেরই সমাজের অংশ হয়ে দীর্ঘদিন এখানে বসবাস করে আসছে। তিনি দিল্লির উদ্দেশ্যে বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে রাশিয়া সুসম্পর্ক গড়তে চাইছে। এটার অর্থ আপনাদের বুঝতে হবে যে, রাশিয়া আপনাদের ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলার পর্যায়ে আছে। তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, পাকিস্তানের নিকট থেকে ইউক্রেন ভালো সমর্থন পাচ্ছে এবং বর্তমান পরিস্হিতিতে ইসলামাবাদ ইউক্রেনের জনগণের পাশেই আছে।
রুশ তেল কেনার পক্ষে জয়শঙ্কর : এদিকে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল কেনা নিয়ে ইউক্রেন অসন্েতাষ প্রকাশ করলেও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মনে করেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান আগ্রাসনের মধ্যেও মস্কোর নিকট থেকে তেল কেনার যৌক্তিকতা বিশ্ববাসীকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন তারা। তিনি বলেন, ভারত এই ব্যাপারে একগুয়ে মনোভাব দেখাচ্ছে না, কিন্তু আমরা এটাও বিশ্ববাসীকে জানাতে চাই যে, আমাদের জনগণের ওপর আমাদের দায়বদ্ধতা আছে। সেই দায়বদ্ধতা থেকে আমাদের একটি সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে, যেটা সব মহলে গ্রহণযোগ্যতা নাও পেতে পারে। কিন্তু অবস্হার পরিপ্রেক্ষিতে তার যৌক্তিকতাও একটু ভেবে দেখার দাবি রাখে।
তিনি বলেন, তেলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা এমন একটা পরিস্হিতি যখন প্রতিটি দেশ তার জনগণের স্বার্থে সম্ভাব্য সব ব্যবস্হাই গ্রহণ করবে। জনগণের কাছে কম খরচে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। আমরা খোলাখুলিভাবে স্বীকার করছি, আমরা কম দামে তেল পাবার সুযোগটা গ্রহণ করছি যেটা সবার কাছে প্রশংসনীয় নাও হতে পারে। —ওয়াইওন নিউজ