২৯শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার,রাত ১:৩০

শিরোনাম
খুলনায় ১৯ জন কৃতি শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা ও আর্থিক সুবিধা প্রদান সিএসএস মাইক্রোফাইন্যান্স প্রোগ্রাম’র খুলনার সেনের বাজার সিএসএস কার্যালয়ে রেভারেন্ড পল মুন্সী স্মরণে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প খুলনায় “মহাসড়কে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বিধানে অংশীজনদের সাথে মতবিনিময় সভা” অনুষ্ঠিত খুলনায় “৫ বছরের জন্য শিশু কল্যাণে যৌথ পরিকল্পনা প্রণয়ন কর্মশালা” ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ’র খুলনায় ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ এর ২ দিনব্যাপী “শিশু কল্যাণে পরিকল্পনা প্রণয়ন কর্মশালা-২০২৫” এর সমাপনী অনুষ্ঠিত শহীদ সাকিবের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে খুলনায় এনসিপি’র কার্যক্রম শুরু নগরীতে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর গোলাগুলি, পলাশসহ গ্রেপ্তার ১১ খুলনায় পদ্মা ব্যাংকে জমানো অর্থ ফেরত না পেয়ে বিপাকে গ্রাহকরা, ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ সকল শহীদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার বিনম্র শ্রদ্ধা

ভোমরা বন্দর সড়কে আমদানী-রপ্তানী পণ্যবাহী ট্রাকের ভিড়ে ভয়াবহ যানজট

প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২১

  • শেয়ার করুন

এম জিয়াউল ইসলাম জিয়া, ভোমরা(সাতক্ষীরা): চলমান প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের করাল গ্রাসী
আগ্রাসান আর ভয়াবহ যানজটে ভোমরা স্থলবন্দর সড়ক এখন ভাইরাস সংক্রমনজটে পরিনত হয়েছে।
যানজটের কুফলে শারিরীক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় না থাকায় ভয়াবহরুপে বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা
সংক্রমন। দূর্বিষহ যানজটের কবলে পড়ে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের শিকার হচ্ছে সকল পর্যায়ের মানুষ।
শ্রমিক থেকে শুরু করে সাধারন খেটে খাওয়া মানুষ সামাজিক ও শারিরীক দূরত্ব উপেক্ষা করে মিশে
যাচ্ছে বন্দর সড়কের যানজটে। ভোমরা জিরোপয়েন্ট এলাকা থেকে প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক পথ দখল
করে অবস্থান করছে ভারতীয় আমদানীকৃত সারিবদ্ধ পণ্যবাহী ট্রাকগুলো। দীর্ঘ এক কিলোমিটার সড়ক
পথ যানজটে পরিনত হওয়ায় সীমান্ত প্রশাসন বিজিবি, কাষ্টমস প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সদস্যরা
তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হিমশিম খাচ্ছে। প্রতিদিন ভোমরা বন্দর সড়কে আমদানী-রপ্তানী
পণ্যবাহী ট্রাকের ভিড়ে সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ যানজট। আর এই যানজটের কুফলে পড়ে সাধারন মানুষসহ
সরকারী-বেসরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পায়ে হেঁটে পৌঁছাচ্ছে তাদের
গন্তব্যস্থলে।দীর্ঘদিনের এ যানজট সমস্যা নিরসনে একটি প্রভাবশালী ব্যবসায়ী মহল চাঁদাবাজির অর্থ
দিয়ে লোকবল বৃদ্ধি করলেও যানজট সমস্যা নিরসনে বাস্তবে তার কোনো প্রতিকার ব্যবস্থা নেই। ভোমরা
স্থলবন্দর ট্রান্সপোর্ট মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি ও সদর থানা আওয়ামীলীগ এর সহসভাপতি
কামরুল ইসলামসহ একাধিক ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে জানান, ভোমরা কাষ্টমস সিএন্ডএফ এজেন্টস
কর্মচারী এ্যসোসিয়েশনের মেয়াদোত্তীর্ণ বিতর্কিত সাধারন সম্পাদক নাজমুল আলম মিলন
এ্যসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছাড়াই অঘোষিতভাবে ভোমরা জিরোপয়েন্ট
কার্গো শাখায় একক নেতৃত্বে অফিস সহকারীর মাধ্যমে ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভারদের নিকট থেকে
আদায় করছে অবৈধ চাঁদার টাকা। সরকারী বিধি অমান্য করে দীর্ঘদিন যাবত কার্গো শাখায় ভারতীয়
ট্রাক ড্রাইভারদের নিকট থেকে বাধ্যতামূলক ট্রাক প্রতি ২০ টাকা হিসাবে চাঁদা আদায় করে
আসছে। এই অবৈধ আদায়কৃত চাঁদার টাকা বন্দর সড়ক পথ যানজটমুক্ত রাখা ও নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা
উন্নয়নে ব্যয় করার কথা থাকলেও অদ্যবধি তার কোনো বাস্তব প্রতিফলন ঘটেনি। প্রতিদিন ভারতের
ঘোজাডাঙ্গা স্থলবন্দর থেকে প্রায় তিনশ আমদানীকৃত পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশের ভোমরা স্থলবন্দর
অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। মেয়াদোত্তীর্ণ বিতর্কিত সাধারন সম্পাদক নাজমুল আলম মিলনের নির্দেশে তার
অফিস সহকারী কার্গো শাখায় অবস্থান নিয়ে ভারতীয় ট্রাক প্রতি ২০ রুপি চাঁদা আদায়ে
প্রতিদিন আদায়কৃত চাঁদার পরিমান দাঁড়ায় ৬ হাজার ভারতীয় রুপি। যার প্রতি সপ্তাহে চাঁদা
আদায়ের পরিমান হয় ৩৬ হাজার ভারতীয় রুপি। এভাবে প্রতি মাসে চাঁদা আদায়ের পরিমান দাঁড়ায় ১
লক্ষ ৪৪ হাজার ভারতীয় রুপি। যা বাংলাদেশী মুদ্রায় দাঁড়ায় দেড় লক্ষাধিক টাকা। বন্দর সড়ক যানজটমুক্ত
করার লক্ষ্যে সাতজন কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়।এদের মধ্যে ৩ জন নৈশ প্রহরী(নাইট গার্ড) এবং ৪ জন
লাইন ম্যান অর্থাৎ সড়ক থেকে দ্রæত গাড়ি সরিয়ে দিয়ে যানজটমুক্ত করার দায়িত্বে নিয়োজিত।
আদায়কৃত চাঁদার টাকা থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীদের প্রত্যেককে ৭ হাজার টাকা মাসিক বেতন
হিসাবে প্রতি মাসে ব্যয় করা হয় ৪৯ হাজার টাকা। এছাড়া ওই চাঁদার টাকা থেকে ভোমরা
ইউনিয়নের ২১ জন মুক্তিযোদ্ধাকে প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা সম্মানি প্রদান হিসাবে ২১ হাজার
টাকা ব্যয় করা হয়। প্রতি মাসে নিয়োগপ্রাপ্ত ৭ জন কর্মীর মাসিক বেতন ৪৯ হাজার টাকা এবং
মুক্তিযোদ্ধা বাবদ ২১ হাজার টাকা ব্যয়ে টাকার পরিমান হয় ৭০ হাজার টাকা। অবশিষ্ট ৮০ হাজার টাকা
চলে যায় মিলনের পকেটে। সরকারী বিধি নিষেধ উপেক্ষা করে চাঁদাবাজির অপকর্ম ঢাকতে প্রতি মাসে

২০ হাজার টাকা চলে যায় পুলিশ প্রশাসন দপ্তরে। বাকি ৬০ হাজার টাকা থেকে যায় মিলনের নিজস্ব
পকেটে। এমন অভিযোগ করেছেন, অত্র সিএন্ডএফ কর্মচারী এ্যসোসিয়েশনের একাধিক নির্বাহী
কর্মকর্তারা। অভিযোগে আরো জানা যায়, অবৈধভাবে আদায়কৃত চাঁদার টাকা ভোমরাসহ
বিভিন্ন এলাকার জঙ্গী সম্পৃক্ত কওমী মাদ্রাসায় ব্যয় করা হয়। সম্প্রতি ভুক্তভোগীদের চাপের মুখে পড়ে
গত এপ্রিল ২০২১ থেকে কওমী মাদ্রাসায় চাঁদার টাকা দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এ বিষয়ে নাজমুল আলম
মিলনের ব্যবহৃত (০১৭৪০-৫৫৮২৭৬) নং মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে
পাওয়া যায়নি। মূলত ভোমরা বন্দর সড়ককে যানজটমুক্ত করার লক্ষ্যে অঘোষিতভাবে ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভারদের
নিকট থেকে বাধ্যতামুলক গাড়ী প্রতি ২০ টাকা চাঁদা হিসাবে আদায় করা হয়। এদিকে সিএন্ডএফ
কর্মচারী এজেন্ট এ্যসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বন্দর সড়ক যানজটমুক্ত রাখার জন্যে ৭ জন কর্মী নিয়োগ
দেওয়া হলেও সড়ক পথে যানজটে থাকা ভারতীয় খালি ট্রাকগুলো দ্রæত সরিয়ে না দিয়ে তারা জগদ্দল পাথরের
মতো দাঁড়িয়ে থাকে। এদিকে বন্দরে ভয়াবহ যানজটের কবলে পড়ে ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভার স্বপন দাস(যার
গাড়ি নং-ডবিøউবি-৩৫-১৭৪৮), ভারতের উত্তর প্রদেশের ট্রাক চালক উত্তম সিংহ (যার গাড়ি নং-
আইজিসি-১৫৬৪), উত্তর প্রদেশের ট্রাক চালক যোগেস ইয়াদপ (যার গাড়ি নং-এমএইচ-০৪-এফডি-
৭৭৫৮), ভারতীয় গাড়িচালক সাবের আলী মন্ডল(যার গাড়ি নং-ডবিøউবি-২৫-ডি-৭৬১৩) এবং ভারতীয়
ট্রাকচালক আক্তারুল মন্ডল (যার গাড়ি নং-ডবিøউবি-২৫-বি-৮৪১৭) জানান, তারা ঘোজাডাঙ্গা বন্দর
থেকে ভোমরা বন্দরে প্রবেশের পর সড়ক পথে এক-দেড় ঘন্টা যাবত দাঁড়িয়ে আছে। দুই মিনিটের পথ
অতিক্রম করলে তারা স্থলবন্দর পার্কিং ইয়ার্ডে পৌঁছাতে পারে। সেখানে ব্যাপক যানজটের কারণে তাদের
ঘন্টার পর ঘন্টা সড়কের উপর অবস্থান করতে হয়। তারা অভিযোগ করে আরো জানান, বন্দর কর্তৃপক্ষের চরম
অবহেলায় ভয়াবহ যানজটের কবলে পড়ে চরম দূর্ভোগের শিকার হতে হয়। এছাড়া ভোমরা স্থলবন্দরের
সিকিউরিটি গার্ড আল মামুন জানায়, বুধবার(২৮ জুলাই ২০২১) স্থলবন্দর পার্কিং ইয়ার্ডের অফিস
গেট থেকে ভারত থেকে আসা আমদানীকৃত পণ্যবাহী ট্রাকগুলোর নম্বর ও পণ্যাদি রেজিস্টার বহিতে
লিপিবদ্ধ করা হয়। কিন্তু সড়কে ব্যাপক যানজটের কারণে অফিস গেট থেকে বেরিয়ে এসে সড়কের উপর
দাঁড়িয়ে যানজটের কবলে পড়া ভারতীয় আমদানীকৃত পণ্যবাহী ট্রাকগুলোর নম্বর ও পণ্যাদি রেজিস্টার
বহিতে লিপিবদ্ধ করতে হচ্ছে।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন