এম জিয়াউল ইসলাম জিয়া, সীমান্ত ব্যুরো প্রধানঃ
নজিরবিহীন ঘুষবাণিজ্য কেলেঙ্কারীর আবর্তে নিমজ্জিত ভোমরা স্থলবন্দর জিরোপয়েন্ট কার্গো শাখা। স্থলবন্দর ভোমরায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কঠোর লকডাউন চললেও কার্গো শাখায় চলমান ঘুষবাণিজ্যে নেই কোনো লকডাউন। কাষ্টম প্রশাসনের উচ্চস্তরে বসা প্রশাসনিক কর্তাদের দৃষ্টির অগোচরে বহাল তবিয়তে চলছে অবাধ ঘুষবাণিজ্য। স্থলবন্দর কার্গো শাখায় কতিপয় কাষ্টম্স ও ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টের কতিপয় অসাধু ঘুষখোর দূর্ণীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী, ভোমরা সিএন্ডএফ কর্মচারী এ্যসোসিয়েশনের কথিত নেতার উস্কানি এবং কাষ্টম্সের বহিরাগত দালাল(এনজিও) নামক ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা বিশাল শক্তিশালী সিন্ডিকেট প্রত্যক্ষভাবে ঘুষবাণিজ্যের দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত। চতুর্বাজ ঘুষখোর কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অনেক সময় কৌশল পরিবর্তন করে কাষ্টম্স ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে আদায় করা হয় ঘুষবাণিজ্যের মোটা অঙ্ক। বন্দর সংশ্লিষ্ট একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীদের এমন অভিযোগ প্রিন্ট মিডিয়া ও ভারত-বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় ফলোআপভাবে সংবাদ প্রকাশিত হয়ে আসলেও উভয় প্রশাসনের মগডালের কর্তাদের মাথা ব্যাথা নেই । বন্দরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, জিরোপয়েন্ট কার্গো শাখায় চোরে চোরে মাস্তুতো ভাইদের নিবিড় সম্পর্কে গড়ে ওঠা শক্তিশালী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ব্যে কার্গো শাখার ঘুষবাণিজ্য এখন নিয়ন্ত্রনের বাইরে। ফলে অঘোষিত শক্তির দাপটে দূর্ণীতির শীর্ষে অবস্থান নিয়েছে ঘুষখোরদের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। ভোমরা জিরোপয়েন্ট কার্গো শাখায় ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভারদের নিকট থেকে প্রতি সপ্তাহে আদায় করা হয় ১ লক্ষ বিশ হাজার ভারতীয় রূপি, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় দাঁড়ায় প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকা। প্রতি মাসে দেশীয় মুদ্রায় ঘুষবাণিজ্যের পরিমান হয় ৭ লক্ষ ২০ হাজার টাকা এবং বছরে এই ঘুষ অঙ্কের পরিমান দাঁড়ায় ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা। যেটা দৈনিক সাপ্তাহিক মাসিক এবং বাৎসরিক হিসাবের খতিয়ান থেকে বেরিয়ে আসছে ঘুষবাণিজ্য অর্থের পরিমান। কার্গো শাখার গোলচত্তরে তিন দফায় আদায় করা হয় ঘুষের টাকা। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক ড্রাইভারদের নিকট থেকে প্রতি গাড়ী ভারতীয় ১০০ রূপী আদায় করে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। সুতরাং প্রাপ্ত ঘুষের টাকার অংশ হিসাবে কাষ্টম্সের ৪০ টাকা, ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টের জন্য ৪০ টাকা এবং সিএন্ডএফ কর্মচারী এ্যাসোসিয়েশনের কথিত নেতার জন্যে ২০ টাকা ভাগাভাগি করে নেওয়া হয়। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সচল রাখার স্বার্থে ভারত থেকে প্রতিদিন ৩শ আমদানীকৃত পণ্যবাহী ট্রাক ভোমরা বন্দর অভ্যন্তরে প্রবেশ করছে। ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক প্রতি ৪০ টাকা উৎকোচ আদায়ে প্রতিদিন অঙ্কের পরিমান দাঁড়ায় ১২ হাজার টাকা এবং সাপ্তাহিক ঘুষ আয়ের পরিমান দাঁড়ায় ৭২ হাজার টাকা। মাসিক আদায়ের পরিমান হয় ২ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকা। এ হিসাবে বাৎসরিক আদায়ের পরিমান আসে ৩৪ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা। এই আদায়কৃত ঘুষের বেশি টাকা গ্রীজার শাহ আলম, আকবর ও শ্রেষ্ঠ দূর্ণীতিবাজ আব্দুর রাজ্জাকের পকেটে চলে যায়। টাকার বাকী অংশ অন্যান্য সহযোগীদের মধ্যে ভাগাভাগি করে দেওয়া হয়। এভাবে ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট, দালাল(এনজিও) ও কথিত সিএন্ডএফ নেতা আদায়কৃত ঘুষের টাকা ভাগাভাগি করে নেয়। এমন অভিযোগ করেছেন বন্দরের প্রত্যক্ষদর্শী সংশ্লিষ্টরা। বীরদর্পে ঘুষবাণিজ্য পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত ম্যান অব মাদারিপুর (ঢাকা) সিপাহী রাজ্জাক, ম্যান অব গোপালগঞ্জ, গ্রীজার শাহ আলম এবং আকবরের খুঁটির জোর কোথায়? ভোমরা কাষ্টম্সের সহকারী কমিশনারের ঘোষিত বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে অঘোষিতভাবে ঘুষবাণিজ্যের স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করার নেপথ্যের নির্দেশদাতা কে? প্রতিনিয়ত এমন অভিযোগ আসছে ভুক্তভোগীদের নিকট থেকে। চলমান ভোমরা কাষ্টম্সের এই শীর্ষ তিনজন ঘুষখোরদের বিরুদ্ধে একাধিকবার প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশিত হলেও আজও তারা অদৃশ্য শক্তির মদ্বদে ঘুষবাণিজ্যে লড়াই করছে। বিষয়টি বন্দর সংশ্লিষ্ট শুল্ক গোয়েন্দা, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা(এনএসআই), ডিজিএফআইসহ অন্যান্য গোয়েন্দাদের নজরদারীতে এনে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোর দাবী জানিয়েছেন বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
তারিখ: ০৮/০৬/২০২১
উপদেষ্টা সম্পাদকঃ এস এম নজরুল ইসলাম
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ শেখ তৌহিদুল ইসলাম
বার্তা সম্পাদকঃ মো: হুমায়ুন কবীর
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৩১ বি কে রায় রোড,খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ বাড়ি নং-২৮, রোড নং-১৪, সোনাডাঙ্গা আ/এ (২য় ফেজ) খুলনা থেকে প্রকাশিত ও দেশ প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন, ৪০ সিমেট্রি রোড থেকে মুদ্রিত।
যোগাযোগঃ ০১৭১৩-৪২৫৪৬২
ফোন : ০২-৪৭৭৭২১০০৫, ০২-৪৭৭৭২১৩৮৩
ই-মেইলঃ dailytathaya@gmail.com
কপিরাইট © দৈনিক তথ্য । সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত