প্রকাশিত: এপ্রিল ১০, ২০২২
এম জিয়াউল ইসলাম জিয়াঃ
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সাতক্ষীরার স্থলপথে ভোমরা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট রুট দিয়ে শুরু হয়েছে ট্যুরিস্ট ভিসায় ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত। প্রায় দুই বছর অতিবাহিত হওয়ার পর স্বস্তি ফিরেছে উভয় দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রীদের মধ্যে। বৈশ্বিক করোনা সংক্রমন রোধে ২০২০ সালের ১৩ মার্চ ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ভারত। কিছুটা সংক্রমন কমে আসলে মেডিকেল ও বিজনেস ভিসা চালু হলেও দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল ট্যুরিস্ট ভিসায় যাতায়াত। ভারত-বাংলাদেশ পাসপোর্ট যাত্রীদের গমনাগমনের সহজ উপায় সাতক্ষীরার ভোমরা ইমিগ্রেশন রুট। কেননা, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোলকাতা থেকে বাংলাদেশের সাতক্ষীরার স্থল ইমিগ্রেশন রুটের দূরত্ব মাত্র ৬০ কিঃমি। যোগাযোগ ব্যবস্থা ও দূরত্ব কম থাকায় উভয় দেশের পাসপোর্ট যাত্রীরা ভোমরা ইমিগ্রেশন রুট ব্যবহার করে আসছে। গত ৪ এপ্রিল ২০২২ থেকে ভোমরা ইমিগ্রেশন স্থল রুট দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের পাসপোর্ট যাত্রীরা অনায়াসে যাতায়াত শুরু করেছে। ভোমরা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন খাঁন জানান, ভোমরা বন্দর ইমিগ্রেশন রুট দিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের মেডিকেল ও বিজনেস ভিসার পাশাপাশি ট্যুরিস্ট ভিসার পাসপোর্ট যাত্রীদের নির্বিঘেœ যাতায়াত করতে কোনো বাধা নেই। ভারতে ভ্রমনইচ্ছুক পাসপোর্ট যাত্রীদের কেবল মাত্র দুটি ডোজের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সনদ সঙ্গে রাখতে হবে। এদিকে গত ৪ এপ্রিল থেকে ভোমরা বন্দর ইমিগ্রেশন রুট দিয়ে ট্যুরিস্ট ভিসায় বাংলাদেশ-ভারতের পাসপোর্ট যাত্রীদের গমনাগমন চোখে পড়ার মত। প্রতিবছর ভোমরা বন্দর দিয়ে ট্যুরিস্ট ভিসায় প্রায় ৫ লক্ষ পাসপোর্ট যাত্রী ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করে। যাত্রীদের কাছ থেকে ভিসা ফি বাবদ ভারতীয় দূতাবাসের আয় প্রায় ৫০ কোটি টাকার কাছাকাছি। আর ভ্রমনকর বাবদ বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব আসে প্রায় ২৫ কোটি টাকা। ২০২০ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা সংক্রমন দেখা দিলে ১৩ মার্চ সীমান্ত বন্ধ করে ভ্রমনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভারত। এতে বন্ধ হয়ে যায় উভয় দেশের যাত্রী যাতায়াত। পরে করোনা সংক্রমন কমে আসলে ৬ মাস পর মেডিকেল ও পরে বিজনেস ভিসা চালু হয়। তবে এসব ভিসায় জটিলতা বেশি থাকায় ভ্রমনে বাধা হয়ে দাড়াচ্ছে। ফলে দুই দেশের মানুষের দাবী ছিল ট্যুরিস্ট ভিসা চালুর মাধ্যমে যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ করা। অবশেষে গত ২৫ মার্চ ২০২২ থেকে ভারতীয়দের ট্যুরিস্ট ভিসার আবেদন গ্রহন করে কোলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। পরে ৩০ মার্চ থেকে বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসগুলো বাংলাদেশীদের ট্যুরিস্ট ভিসা প্রদান করে। গত ৪ এপ্রিল ২০২২ থেকে ট্যুরিস্ট ভিসায় ভোমরা বন্দর দিয়ে ভারতে ভ্রমন শুরু হয়। সহজে ভিসা পাওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে যাত্রীদের মাঝে। বাংলাদেশীদের ভিসা দিতে ভারতীয় দূতাবাস ৮৪০ টাকা চার্জ নিচ্ছে। আর বাংলাদেশ দূতাবাস ভিসা ফিস নিচ্ছে ৮২৫ রুপি। সীমন্ত অতিক্রমের সময় বাংলাদেশ সরকার ভ্রমনকর বাবদ ১২ বছরের উর্দ্ধে প্রত্যেক যাত্রীদের ৫০০ টাকা, ৫-১২ বছরের মধ্যের যাত্রীদের ২৫০ টাকা আদায় করছে। ৫ বছরের নিচের শিশুদের ভ্রমনকর মওকুফ রয়েছে।
এম জিয়াউল ইসলাম জিয়া