প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২১
চলমান সংকটের নিরসন না হতেই তাইওয়ানের কাছাকাছি চীনের ফুজিয়ান প্রদেশে সামরিক মহড়া চালিয়েছে চীন। যে কোনো সময় এটি হামলার মূল কেন্দ্রস্থল হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে তাইপে।
তবে চীন বলছে, তাইওয়ানের সঙ্গে চলা উত্তেজনার সঙ্গে এ মহড়ার কোনও সম্পর্ক নেই।
সম্প্রতি তাইওয়ানের আকাশসীমায় রেকর্ডসংখ্যক চীনা যুদ্ধবিমান অনুপ্রবেশের ঘটনায় অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় চীন-তাইওয়ান সম্পর্কে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ পরিস্থিতির মধ্যেই সোমবার (১১ অক্টোবর) চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির দৈনিক পত্রিকা তাদের উইবো মাইক্রোব্লগিং সাইটে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ফুজিয়ান প্রদেশের দক্ষিণাংশে সেনা সদস্যরা মহড়া চালিয়েছে। এতে কিছু সেনা এবং নৌকা অংশ নিয়েছে। সৈকতে আক্রমণ শানাতে সেনাদেরকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে এ মহড়া চালানো হয়। মহড়ার ব্যাপারে বিস্তারিত আর কিছু জানায়নি চীনের সামরিক পত্রিকা।
তবে পত্রিকাটির দেওয়া মহড়ার একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ছোট ছোট নৌকায় করে সেনারা সৈকতে আক্রমণ চালাচ্ছে। তারা স্মোক গ্রেনেড ছুড়ছে, কাঁটাতারের প্রতিরক্ষা বেষ্টনী পার হচ্ছে এবং বালুতে ট্রেঞ্চ খুঁড়ছে।
অঞ্চলটির কাছেই অবস্থান হওয়ার ফলে যে কোনো সময় এটি হামলার মূল কেন্দ্রস্থল হতে পারে বলে আশঙ্কা তাইওয়ানের। যদিও চীন বলছে, তাইওয়ানের সঙ্গে চলা উত্তেজনার সঙ্গে এই মহড়ার কোনও সম্পর্ক নেই।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং একদিন আগেই এক ভাষণে এক দেশ দুই নীতিতে চীন-তাইওয়ানের পুনরায় একত্র হওয়ার ঘোষণা দেন। প্রতিক্রিয়ায় তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট জানান দেন, কোনো চাপে পড়ে চীনের কাছে মাথা নত করবেন না তারা।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি বলেন, তিনি চান তাইওয়ান চীনের সঙ্গে হংকংয়ের মতো ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ এই নীতির আওতায় শান্তিপূর্ণ পুনরেকত্রীকরণে রাজি হোক।
কিন্তু তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় বলেছে, তাইওয়ানের জনগণের ভাবনা স্পষ্ট, তারা ‘এক দেশ দুই ব্যবস্থা’ প্রত্যাখ্যান করেছে। বেইজিংকে ‘অনুপ্রবেশ, হয়রানি ও ধ্বংসের উসকানিমূলক পদক্ষেপগুলো’ পরিত্যাগ করারও আহ্বান জানায় তারা। স্বশাসিত এই দ্বীপটির প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন বলেন, তারা বেইজিংয়ের চাপে নত হবেন না।
তার এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে উল্টো সাই ইন-ওয়েনের ভাষণ সংঘাতকে উস্কে দিচ্ছে বলে দাবি করেছে বেইজিং।
এদিকে, তাইওয়ান নিজেদেরকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করলেও চীন দ্বীপটিকে দেখে নিজেদের ‘বিচ্ছিন্ন প্রদেশ’ হিসেবে। পুনরেকত্রীকরণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে বল প্রয়োগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়নি বেইজিং।
সম্প্রতি চীনা শাসন স্বীকার করে নেওয়ার জন্য বেইজিং সামরিক এবং রাজনৈতিক চাপ বাড়িয়েছে বলে তাইওয়ান অভিযোগ করে আসছে।
চীনের যুদ্ধবিমান সম্প্রতি তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা জোনে (এআইডিজেড) অনুপ্রবেশের পর দুপক্ষে উত্তেজনা বেড়েছে। গত শুক্রবার থেকে টানা চার দিন চীনের বিমান বাহিনীর রেকর্ডসংখ্যক যুদ্ধবিমান তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা জোনে অনুপ্রবেশ করেছে।
এ অনুপ্রবেশের মুখে তাইওয়ান বিশ্বের অন্য গণতান্ত্রিক দেশগুলোর কাছ থেকে সমর্থন কামনা করেছে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদেশগুলোর কাছ থেকে।