কয়রা প্রতিনিধি : পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ও ঐশ্বর্যমন্ডিত বনগুলোর মধ্যে আমাদের সুন্দরবন অন্যতম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব লীলাভূমি এ বন। এর চার দিক নিবিড় ঘন, চিরসবুজ এবং নিস্তব্ধ। সর্বত্রই সবুজের রাজত্ব। গাছপালা অপরূপ সাজে সজ্জিত। ভারত ও বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে বিস্তৃত এ শাসমূলীয় বন (ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট) আমাদের দেশে অংশে ৩৮ ভাগ।
প্রাকৃতিক এই বনভূমি এদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরগুনা ও পটুয়াখালী মোট ৫ টি জেলার সীমান্ত ঘেঁষে অবস্থিত। সুন্দরবনকে ঘিরে বাকী চার জেলায় কমবেশি পর্যটন শিল্প গড়ে উঠলেও খুলনা জেলায় বিগত দিনে খুব একটা চোখে পড়তো না। সম্প্রতি বন বিভাগের পক্ষ থেকে কালাবগী ও শেখের টেকে ২ টি ইক্যুট্ররিজম কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে।
তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না থাকায় সেগুলো আলোর মুখ দেখবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। খুলনা রেঞ্জে বিকল্প কয়রার ৪নং কয়রা লঞ্চঘাট সংলগ্ন সুন্দরবন এলাকায় একটি ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবিতে পরিনিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কয়রা সহ ভ্রমন পিপাসু মানুষের দাবি সুন্দরবনের ৪নং কয়রা এলাকায় একটি ইক্যুট্ররিজম কেন্দ্র স্থাপন করা হোক।
এলাকাবাসির সথে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে কয়রা সদর থেকে ৪ কি. মি পূর্বে ৪নং কয়রা লঞ্চঘাট সংলগ্ন স্থানটি পর্যটনের জন্য খুবই সম্ভাবনাময় হিসেবে দেখছে সাধারন মানুষ। খুলনা থেকে ৯৯ কি.মি দক্ষিণের এই স্থানটি আসার জন্য খুলনার সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে সরাসরি বাসযোগে (বাসভাড়া ১৮০ টাকা জনপ্রতি ,সময় লাগবে ৩ ঘন্টা) কয়রা সদরে পৌছে মদিনাবাদ মডেল সরকারি হাইস্কুল মোড় থেকে ইজিবাইক/ মোটর সাইকেলযোগে (ইজিবাই ২০ টাকা, মোটরসাইকেল-৫০ টাকা জনপ্রতি) মাত্র ১০ মিনিট লাগবে ৪নং কয়রা লঞ্চঘাট পর্যটন কেন্দ্র পর্যন্ত পৌছতে। অন্যদিকে খুলনা নতুন বাজার লঞ্চঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল ১১.৩০ মিনিটে ছেড়ে আসা লঞ্চযোগে ( সময় লাগবে ৭ ঘন্টা, ভাড়া জনপ্রতি ১৫০ টাকা) পর্যটন কেন্দ্রে পৌছানো সম্ভব। নামতে হবে ৪নং কয়রা লঞ্চঘাটে ( লঞ্চঘাটের পাশেই অপর সম্ভাবনা রয়েছে ইক্যুট্ররিজম কেন্দ্র )। কয়রা সদরে স্বল্প খরচে থাকার জন্য রয়েছে কয়েকটি আবাসিক হোটেল।
৪নং কয়রা বনজীবি সমিতির সমিতির সভাপতি খলিল ঢালী বলেন, এখানে স্বল্প খরচে ইঞ্জিনচালিত বোটযোগে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে দেখা যাবে। রয়েছে বিশাল এলাকাজুড়ে মনজুড়ানো গোলপাতা ট্রি প্লান্ট প্রজেক্ট। দলবেঁধে পিকনিক করারও সু ব্যবস্থা রয়েছে নদীর পাড়ে। বর্তমানে বসার স্থান ও রেষ্টুরেন্ট, কপি হাউজ গড়ে তোলা হয়েছে এই এলাকায়। এই এলাকায় আসলে আরো আবলোকন করা যাবে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী” আদিবাসী মুন্ডা সম্প্রদায়ের “বৈচিত্র্য্যময় জীবনাচার। কয়রা সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এইচ.এম শাহাবুদ্দীন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের অসংখ্য পর্যটন স্পটের মতো আমরাও যুক্ত হতে চাই অর্থনৈতিক গুরুত্বে।
এলাকাবাসী বিশেষ করে তরুণ সমাজকে এই পর্যটন আন্দোলনে সম্পৃক্ত করে তাদের সামাজিক উন্নয়ন কর্মকান্ডে উৎসাহিত করে সমাজে ইতিবাচক ভূমিকায় উদ্বুদ্ধ করা সম্ভব। মাদক ও অন্যান্য অসামাজিক কার্যকলাপের কবল থেকে তারণ্যকে মুক্ত রাখার জন্য এই প্রয়াসের গুরুত্ব অপরিসীম”শীত মৌসুম ও দুই ঈদের ছুটিতে ৪নং কয়রা এলাকায় লোক সমাগম হয় খুব। তা ছাড়া প্রতি দিন শত শত ভ্রমন পিপাসু মানুষের আনাগনা দেখা যায়। বন বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুনজর পড়লে এই স্থানটি হয়ে উঠবে দেশের অন্যতম দর্শনীয় স্থান।
সরকার রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি এই অঞ্চলের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে আরও যত্নশীল হবে বলে আশাবাদী। প্রকৃতি সুন্দরবন দেখার জন্য এই এলাকাটি রয়েছে অপরসম্ভাবনা। কয়রা সদর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান সরদার লুৎফর রহমান বলেন, ইতিমধ্যে এই এলাকায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকসমাগম ঘটছে। সুন্দরবন উপভোগ করার জন্য এত সৌন্দর্যপ্রিয় এলাকা খুবই কম। তাই এখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার অপার সম্ভবনা রয়েছে। ৪নং কয়রা লঞ্চঘাট সংলগ্ন এলাকায় বন বিভাগের কাশিয়াবাদ স্টেশনের মাধ্যমে একটি ইক্যুট্ররিজম কেন্দ্র গড়ে তোলা হলে ব্যাপক লোকজনের সমাগম হবে এই এলাকায়। ৪নং কয়রা এলাকায় ইক্যুট্ররিজম কেন্দ্র স্থাপনের একটি প্রস্তাবনা রয়েছে। সেটি দ্রুত বন বিভাগের মাধ্যমে বাস্তবায়ন চাই এই এলাকার অধিবাসিরা।
উপদেষ্টা সম্পাদকঃ এস এম নজরুল ইসলাম
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ শেখ তৌহিদুল ইসলাম
বার্তা সম্পাদকঃ মো: হুমায়ুন কবীর
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৩১ বি কে রায় রোড,খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ বাড়ি নং-২৮, রোড নং-১৪, সোনাডাঙ্গা আ/এ (২য় ফেজ) খুলনা থেকে প্রকাশিত ও দেশ প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন, ৪০ সিমেট্রি রোড থেকে মুদ্রিত।
যোগাযোগঃ ০১৭১৩-৪২৫৪৬২
ফোন : ০২-৪৭৭৭২১০০৫, ০২-৪৭৭৭২১৩৮৩
ই-মেইলঃ dailytathaya@gmail.com
কপিরাইট © দৈনিক তথ্য । সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত