প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০২০
মানুষের হক নষ্ট করে সেজদায় জান্নাত খোঁজা ছেড়ে দিন। কারণ ব্যক্তির হক বিনষ্টকারীকে আল্লাহ মাফ করবেন না।বান্দার হক নষ্ট করার গুনাহ ক্ষমা করার এখতিয়ার আল্লাহ নিজ হাতে রাখেন-নি। তবে একমাত্র সেই লোক (যার হক নষ্ট হয়েছে); সে বাদে আর কেউ ক্ষমা করতে পারবে না।
এটা তাঁদের দুনিয়াতে ফেরত দিতে হবে। তাঁরা হক দুনিয়াতে ফেরত দেবে এবং বাধ্য হয়ে ফেরত দেবে। কারণ, আল্লাহ জালেমকে সুযোগ দেন, কিন্তু জালেমের ব্যাপারে আল্লাহ অমনোযোগী নন। আল্লাহ জালেমের প্রত্যেকটি পদক্ষেপ পর্যবেক্ষণ করেন। কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, ‘অবশ্যই অচিরে আমি তাদের পাকড়াও করব, সেটা তারা বুঝতেও পারবে না।’
প্রায় সব ওলামায়ে কেরামের ঐকমত্যে সাব্যস্ত হয়েছে যে, জালেম ব্যক্তি কোনোভাবেই পৃথিবীতে পার পাবে না। সে যতই চেষ্টা করুক না কেন, যতই চালাকি করুক না কেন। কারণ, আল্লাহ তার ব্যাপারে বেখবর নন। হয়তো আজকে তাকে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, আগামীকাল তাকে সুযোগ দেওয়া হবে, কিছুদিন তাকে সুযোগ দেওয়া হবে, কিন্তু একদিন না একদিন সে ধরা পড়বেই। আপনি যদি গোটা পৃথিবীর ইতিহাস দেখেন, জালেমদের ইতিহাস দেখেন, তাহলে আপনার কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে যে জালেমদের কাউকে আল্লাহ ছেড়ে দেননি। তাদের পতনের কথা ইতিহাসে লেখা আছে।
দ্বিতীয়ত, জালেমদের ওই আধিকারটুকু কেয়ামতের দিন আল্লাহর দরবারে আবার বুঝিয়ে দিতে হবে ওই মাজলুমের কাছে, যার হক সে নষ্ট করেছে। তাকে অবশ্যই কেয়ামতের দিন তার হক বুঝিয়ে দিতে হবে। কিন্তু সেদিন টাকা পাবে না, ডলার পাবে না, দিনার আর দেরহাম পাবে না, তখন তার নেক আমল দিয়ে হক বুঝিয়ে দিতে হবে। আর যদি নেক আমল না থাকে, তখন ওই অত্যাচারিত ব্যক্তির যত গুনাহ আছে, সেই গুনাহ জালেমের মাথায় নিতে হবে। সুতরাং, এটি কঠিন শাস্তির বিষয়। তাদের সর্বশেষ পরিণতি হবে জাহান্নাম।
বান্দার হক নষ্ট করলে তা হতে ক্ষমা চাওয়ার উপায় ঃ
১। যার হক নষ্ট করেছি তার কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে ।
২। এখন, আমি যদি মন থেকে অপরাধ স্বীকার করলাম, এত দেরিতে যখন (যার হক নষ্ট করলাম), সে মারা গেছেন; সেই ক্ষেত্রে তার উপযুক্ত উত্তরাধিকার এর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। [এই নজীর মক্কা বিজয়- এর পরে দেখা যায়]
.৩। এখন, আমি যদি মন থেকে অপরাধ স্বীকার করলাম, এত দেরিতে যখন (যার হক নষ্ট করলাম), সে মারা গেছেন বা পাওয়া যাচ্ছে না এবং তার উপযুক্ত কোন উত্তরাধিকার কেও পাওয়া যাচ্ছে না; তখন দেখতে হবে, অপরাধ এর ধরন কি? যদি, অপরাধটি আর্থিক ক্ষতি বিষয়ক হয়; তবে, সমপরিমাণ অর্থ “কোন সওয়াব এর প্রত্তাশা না করে” কোন ভাল কাজে দিয়ে দিতে হবে [যেমন, মসজিদ নির্মাণ]। এবং আল্লাহ-র কাছে মন থেকে ক্ষমা চাইতে হবে।
.৪। এখন, আমি যদি মন থেকে অপরাধ স্বীকার করলাম, এত দেরিতে যখন (যার হক নষ্ট করলাম), সে মারা গেছেন বা পাওয়া যাচ্ছে না এবং তার উপযুক্ত কোন উত্তরাধিকার কেও পাওয়া যাচ্ছে না; তখন, যদি, অপরাধটি ঐ লোককে অপমান করার মত কিছু হয়, যেমন ব্যাক্তিগত আক্রমণ (অহংকার, হিংশা, ঘৃণা) এর মত হয়; তখন [“কোন সওয়াব এর প্রত্তাশা না করে”] কাফফরা-স্বরূপ ১০ জন মিসকিনকে এক বেলা খাইয়ে দিয়ে, আল্লাহ-র কাছে মন থেকে ক্ষমা চাইতে হবে। [মনে রাখতে হবেঃ আল্লাহ মুখ দেখেন না; মন দেখেন].
৫। উপরের কোন ভাবেই ক্ষমা না চাইলে , তাকে অবশ্যই “কিয়ামতের দিন হাশরের ময়দানে শেষ বিচারের সময়” বিচারের মুখোমুখী হতেই হবে।
তাই ভাই ও বোনদের বলবো , কিয়ামতের ময়দানে ধরা খেয়ে চিরস্থায়ী আজাবে গ্রেফতার হতে না চাইলে কাউকে কষ্ট দেবেন না কিংবা কারো হক নষ্ট করবেন না , যদি কারো এমন অপরাধ হয়েও থাকে তাহলে অবশ্যই মাফ চেয়ে নিবেন, মনে রাখবেন মাফ চাইলে কেউ ছোট হয়না বরং আল্লাহর কাছেই বড় হবেন ।
এবং চিরস্থায়ী জান্নাত পাবেন ইনশা-আল্লাহ ।