কয়রা প্রতিনিধি : খুলনার কয়রায় 'কয়রা সাংবাদিক ফোরাম' নামের একটি ভুঁইফোড় সংগঠনের নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তারা বিভিন্ন মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়ের পাশাপাশি নানা হয়রাণি করে চলেছে।
আত্মসম্মানের ভয়ে তাদের নির্যাতন নীরবে সহ্য করছে, এমনকি ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও বিতর্কিত সম্মাননা নিতে বাধ্য হচ্ছে। তাদের নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে খুলনার বিভাগীয় কমিশনার বরাবর আবেদন করেছেন কয়রা উপজেলার কর্মরত পেশাদার সাংবাদিক সমাজ সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার লোক। এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার সরাসরি কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদনের অনুলিপি জমা দেয়া হয়েছে। আবেদন ও স্থানীড সূত্র জানা যায়, কতিপয় ব্যক্তি সাংবাদিক সংগঠনের নামে ফেসবুক, হোয়াটঅ্যাপসসহ বিভিন্ন অনিবন্ধিত অনলাইনে স্থানীয় মানুষ ও প্রতিষ্ঠানের নামে অপপ্রচার চালিয়ে ব্লাক মেইলের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন।
এছাড়া অনুমতি না নিয়ে যাকে-তাকে আইডল-আইকন উপাধী দিয়ে গুণীজন সম্মাননার নামে স্টিকার তৈরি করে ফেসবুকে পোস্ট করেন। কোন যাচাই বাচাই ছাড়াই যাকে-তাকে নানা উপাধিতে ভূষিত করছেন। এই গুণিজন সংবর্ধনার নামে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এই চক্রটি অ্যাওয়ার্ড-উপাধির মোড়কে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনকে জিম্মি করে অর্থ আদায় করে আসছে। ইচ্ছা না থাকার পরেও অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কিংবা পেশাজীবী ব্যক্তি সম্মাননা নিতে বাধ্য হচ্ছে। ঐ সংগঠনের সভাপতির বিরুদ্ধে গত ১৮ জানুয়ারি কয়রা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের মিজানুর রহমান নামের এক ব্যবসায়ী। ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা দাবি করেন বলে মিজানুর রহমানের অভিযোগ। এ বছর ১৮ এপ্রিল সংগঠনটি স্থানীয় সংসদ সদস্যকে প্রধান অতিথি ও আওয়ামীগের কয়েকজন নেতাকে বিশেষ অতিথি রেখে গুণিজন সংবর্ধনা-২০২৪ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। কিন্তু সংসদ সদস্য তাদের অপকর্মের তথ্য জানতে পেরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠায় ওই অনুষ্ঠানে অনেকেই সম্মাননা নিতে যাননি।
তবে অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ভয়ে সম্মাননা নিয়েছেন বলে কয়েকজন জানিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এবছর সম্মাননা পাওয়া একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতা বলেন, ফেসবুকে তাদের সম্পর্কে নেগেটিভ কমেন্ট দেখলে ঘৃণা লাগে। তাদের মত ভুইফোঁড় সংগঠন থেকে সম্মাননা নেওয়ার কোন ইচ্ছাই ছিল না। তবে তাদের কথা না শুনলে আমাদের আত্মমর্যাদা নিয়ে টানা হেঁচড়া করবে। এজন্য অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিতে বাধ্য হয়েছি। গত বছরও এমন বিতর্কিত একটি সংবর্ধনার আয়োজন করেন ওই সংগঠনটি। ওই সময়ে সেরা শিক্ষক, সেরা পল্লী চিকিৎসক, সেরা স্বেচ্ছাসেবী, উপকূল বন্ধুসহ একাধিক পদক দেয়া হয়। সেরা নির্বাচনে অর্থ বাণিজ্যের ব্যাপক অভিযোগ ওঠে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের নানা সমালোচনার মুখে পড়ে তারা। এসব ছাড়াও তাদের ফেসবুক আইডিতে নানা বিতর্কিত পোস্ট দিয়ে সমাজে বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করলে সুযোগ বুঝে কয়েকজন মিলে তাকে লাঞ্চিত করে, ভয়ভীতি দেখায়। ওই সংগঠনের সদস্যদের হাতে অনেকেই লাঞ্চিত হলেও আত্মসম্মানের ভয়ে নিরবে সহ্য করছেন। এসব বিতর্কিত কর্মকান্ডে প্রকৃত পেশাজীবী সংবাদকর্মীদের ভাবমূর্তি নষ্টের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ বিভ্রান্তিতে পড়ছে। তাদের হয়রাণি থেকে প্রতিকার পেতে ৬ মে ডাকযোগে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার বরাবর আবেদন করেন পেশাজিিবি সাংবাদিক সহ সমাজের সচেতন মহল। এর আবেদনের কপি সরকারি উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিকট প্রেরন করা হয়েছে।
উপদেষ্টা সম্পাদকঃ এস এম নজরুল ইসলাম
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ শেখ তৌহিদুল ইসলাম
বার্তা সম্পাদকঃ মো: হুমায়ুন কবীর
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৩১ বি কে রায় রোড,খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ বাড়ি নং-২৮, রোড নং-১৪, সোনাডাঙ্গা আ/এ (২য় ফেজ) খুলনা থেকে প্রকাশিত ও দেশ প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন, ৪০ সিমেট্রি রোড থেকে মুদ্রিত।
যোগাযোগঃ ০১৭১৩-৪২৫৪৬২
ফোন : ০২-৪৭৭৭২১০০৫, ০২-৪৭৭৭২১৩৮৩
ই-মেইলঃ dailytathaya@gmail.com
কপিরাইট © দৈনিক তথ্য । সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত