প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২১
স্টাফ রিপোর্টারঃ খুলনার ডুমুরিয়ায় ইটভাটার অত্যাচারে নিস্তেজ হয়ে পড়েছে শোলমারী নদী। নদীর বুকে আধলা ইট ফেলায় করায় ক্রমন্বয় তা ভরাট হয়ে যাচ্ছে। আর এতে হুমকির মধ্যে পড়েছে প্রায় ৫ হাজার একর কৃষি জমি। একদিকে মানবসৃষ্ট সমস্যা, অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তনেরও প্রভাবে ২৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই নদী তার সাধারণ গতিপথ হারাতে বসেছে।
জানা যায়, ডুমুরিয়া উপজেলাধীন রংপুর ইউনিয়নের বিলডাকাতিয়ার বিলাঞ্চল হতে উৎপত্তি শোলমারি নদীটি বটিয়াঘাটা উপজেলার প্রবাহমান কাজীবাছা নদীতে নিপতিত। ২৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য আর ৩০ মিটার প্রস্থের নদীটি মানবসৃষ্ট অত্যাচারে ক্রমন্বয় নিস্তেজ হতে বসেছে। অবৈধ দখলদাররা পাল্লাদিয়ে নদী ভরাট শুরু করেছে। কৈয়া থেকে শোলমারি ১০ ভেন্টের স্লুইজ গেট পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার নদীর দুই পাশদিয়ে বড় বড় রাঘবরা অবৈধভাবে দখল করে নিচ্ছে। পঞ্চু ও শোলমারি স্লুইজ গেটের মুখে ইটভাটা কর্তৃপক্ষ আধলা ইট ফেলে ভরাট করেছে।
মঞ্জু নামের স্থানীয় এক মুদি দোকানদার বলেন, এসবি ভাটা কর্তৃপক্ষ নদীতে ইট ফেলে গেটের সামনে ভরাট করে ফেলেছে। তারা যেখানে কয়লার ঘরটি করেছে, সেটায় সম্পূর্ণ নদীর জায়গায়।
শোলমারি গেট খালাসি মোমিন মোল্যা বলেন, এসবি ভাটা কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে নদীর জায়গা দখল করে নিয়েছে। শুধু নদীই নয়, তারা গেট খালাসির ঘরটিও ভেঙ্গে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে।
ভদ্রা-সালতা পানি ব্যবস্থাপনা এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খান এনামুল হোসেন বলেন, অবৈধ দখলদারদের কারণে শোলমারি নদীটি নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। নদীর প্রস্থসহ গভিরতা কমে যাওয়াতে পানি নিষ্কাশনে ব্যাপক বাঁধা হচ্ছে। অবিলম্বে এসব অবৈধদখল উচ্ছেদ করে নদী পুনঃ খননের একান্ত প্রয়োজন।
এদিকে এসবি ব্রীকসের ম্যানেজার মোঃ জাকির হোসেন বলেন, ভাঙ্গনরোধে আমরা নদীতে ইটের আধলা ফেলেছি। তা না হলে আমাদের অনেক জায়গা নদীতে চলে যেত।
এ প্রসঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনা বিভাগীয় উপ-প্রকৌশলী মোঃ সাঈদুর রহমান বলেন, শোলমারি নদী দিয়ে ২৮/১, ২৮/২, ২৭/১, ২৭/২সহ ৫টি পোল্ডারের পানি নিষ্কাশন হয়। এখানে প্রায় ৫ হাজার একর কৃষি জমি রয়েছে। সময়মত পানি নিষ্কাশন না হলে এসব জমি অনাবাদি হয়ে পড়বে। তিনি বলেন, রাবেয়া ও এসবি ব্রীকসসহ শোলমারি নদীর জায়গা যারাই অবৈধ দখল দিয়েছেন, তাদের তালিকা করে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের কাছে দেয়া হয়েছে। অবিলম্বে সমন্বিত অভিযান শুরু করা হবে।