সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই মোটামুটি ছন্দে পাওয়া গেছে বাংলাদেশকে। তাতে ফলও এসেছে অনায়সে। আরব আমিরারকে হারিয়ে সিরিজ জিতে নিয়েছে নুরুল হাসান সোহানের দল।
মঙ্গলবার দুবাইতে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ৩২ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানেই জিতেছে লাল-সবুজের দল।
প্রথম ম্যাচে টপ অর্ডারদের ব্যর্থতায় প্রত্যাশিত স্কোর হয়নি (১৫৮/৫)। শেষ পাওয়ার প্লে-তে বাংলাদেশ বোলারদের নাভিশ্বাস উঠিয়ে ছেড়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। ওই ম্যাচে ৭ রানের জয়ে তৃপ্তির ঢেউ তোলার উপায় ছিল না।
দুবাইয়ে স্পোর্টিং পিচে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য অতোটা সে কষ্টটা লাঘব করেছে সোহানের দল। সাকিবহীন বাংলাদেশ দল ৩২ রানে জিতে আরব আমিরাতকে হোয়াইট ওয়াশ করে নিউ জিল্যান্ড সফরের প্রস্তুতি নিতে পেরেছে।
দু'দলের মধ্যে ব্যবধান গড়েছে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে। ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে বাংলাদেশের স্কোর যেখানে ৪৮/১, সেখানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ২৮/২। ব্যাটিং পাওয়ার প্লে'র পরে মোসাদ্দেকের এক ওভারে (১-০-২-২) পর পর দুই বলে ২ উইকেট স্বাগতিকদের ব্যাকফুটে নামিয়েছে। শেষ ৩০ বলে ৮০ রানের পর্বতসম টার্গেট পাড়ি দিতে পারেনি সংযুক্ত আরব আমিরাত।
প্রথম ম্যাচের মতো ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে হতাশ করেনি বাংলাদেশ। ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে বাংলাদেশের স্কোর দ্বিতীয় ম্যাচে ৪৮/১। এমন শুরুর পর সংযুক্ত আরব আমিরাত বোলারদের পিষে মারার কথা। তবে শেষ পাওয়ার প্লে-তে ঝড় তুলতে পারেনি বাংলাদেশ।
শেষ ৩০ বলে যোগ করতে পেরেছে ৪৩ রান। স্কোরটা থেমেছে ১৬৯/৫-এ। প্রথম ম্যাচের চেয়ে ১১ রান বেশি করেছে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ম্যাচে।
এই ম্যাচে দুই ওপেনার সাব্বির এবং মিরাজের বিপক্ষে এলবিডাব্লুউ'র আপীলে আম্পায়ারের ইয়েস রায় দেয়া ছিল অন্যায়। বাঁ হাতি স্পিনার আরিয়ার লারকানকে লেগ স্ট্যাম্পের উপর পিচিং ডেলিভারিতে সাব্বিরকে এলবিডাব্লুউতে (৯ বলে ১২) ফিরিয়ে দিয়েছেন আম্পায়ার।
রিভিউ আপীল থাকলে লজ্জা পেতেন ওই আম্পায়ার। মেকশিপ্ট ওপেনার হিসেবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজকে মানিয়ে নেয়া মিরাজের অবধারিত হাফ সেঞ্চুরির পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছেন আম্পায়ার। লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে পিচিং ডেলিভারিতে সাব্বির এলবিডাব্লুউ'র আপীল করেই পেয়েছেন আম্পায়ারের পক্ষপাতমূলক রায়।
টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথম ফিফটি পেতে পেতেও পাননি মিরাজ। টি-টোয়েন্টির ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসটি থেমেছে মিরাজের ৪৬ রানে। যে ইনিংসে ৩৭ বলে ৫টি চার ছিল দেখার মতো। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে লিটনের সাথে দারুণ বোঝাপড়ায় ৪১ রানে দিয়েছেন মিরাজ নেতৃত্ব।
লিটন এদিন বড় ইনিংসের সম্ভাবনা দেখিয়ে থেমেছেন ২৫ রানে। আফজালের বলে দিয়েছেন পয়েন্টে ক্যাচ। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ক্যারিয়ারসেরা ৭৭ রানের হার না মানা ইনিংসের পুনরাবৃত্তি করতে পারেননি মঙ্গলবার আফিফ। আফজালকে দর্শনীয় সুইপ শটে ছক্কা মেরে এক বল পর ফুলটসে পুল করতে যেয়ে মিড উইকেটে দিয়েছেন আফিফ ক্যাচ (১০ বলে ১৮)।
লেগ স্পিনার মায়াপ্পনকে সুইপ করতে যেয়ে লং অনে থেমেছেন মোসাদ্দেক (২২ বলে ৪ চার, ১ ছক্কায় ২৭)। ইয়াসির ১৩ বলে ২১ এবং সোহান ২২ বলে ২৭ রানের হার না মানা ইনিংস উপহার দিয়েছেন। অবিচ্ছিন্ন ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে ইয়াসির-সোহান যোগ করেছেন ১৮ বলে ৩২। যার মধ্যে ইনিংসের শেষ বলে জহুরকে সোহান মেরেছেন ছক্কা।
বাঁ হাতি স্পিনার আরিয়ান এই ম্যাচে করেছেন মিতব্যয়ী বোলিং (৩-০-১৪-১)। আর এক বাঁ হাতি স্পিনার আফজাল পেয়েছেন ২ উইকেট (৪-০-৩৩-২)। ভারতীয় বংশোদ্ভুত কার্তিক মায়াপ্পনকে এই ম্যাচেও সমীহ করেছে বাংলাদেশ ব্যাটাররা (৪-০-২৯-১)।
১৭০ রানের চ্যালেঞ্জ দিয়ে বোলারদের উপর ছিল নির্ভরতা। দলের তৃতীয় এবং নাসুমের প্রথম ওভারে সুইপ করতে যেয়ে চিরাগ সুরি ক্যাচ দিয়ে আসার মধ্য দিয়ে উৎসবের শুরু বাংলাদেশের। তাসকিন লেগ স্ট্যাম্পে পিচিং ডেলিভারিতে ওয়াসিমকে এলবিডাব্লুউতে ফিরিয়ে দিলে ম্যাচ জয়ের আবহ পেতে শুরু করে বাংলাদেশ দল। ম্যাচ থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ছিটকে ফেলেছেন মোসাদ্দেক প্রথম ওভারে পর পর দুই ডেলিভারিতে লাড়কাকে এক্সট্রা কভারে ক্যাচ দিতে বাধ্য করে, অরবিন্দকে বোল্ড করে। তবে স্কোরশিটে ৩০/৪ থেকে সম্মানজনক হারের জন্য লড়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৫ম উইকেট জুটি। ৭১ বলে ৯০ রানের এই পার্টনারশিপ ভেঙ্গেছেন এবাদত নিজের শেষ ওভারে। ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে থেমেছেন বাসিল (৪০ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৪২)। তবে অধিনায়ক রিজওয়ান টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথম ফিফটি পেয়ে ছেড়েছেন (৩৬ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় ৫১)।
এই ম্যাচে দুই বাঁ হাতি পেসার মোস্তাফিজ-শরিফুলের জায়গায় তাসকিন-এবাদত যে সুযোগের দাবিদার ছিলেন, মিতব্যয়ী বোলিংয়ে (তাসকিন ৪-০-২২-১, এবাদত ৪-০-২৪-১) তা জানিয়ে দিয়েছেন।
বাংলাদেশ : ১৬৯/৫ (২০.০ ওভারে)
সংযুক্ত আরব আমিরাত : ১৩৭/৫ (২০.০ ওভারে)
ফল : বাংলাদেশ ৩২ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : মিরাজ (বাংলাদেশ)।
উপদেষ্টা সম্পাদকঃ এস এম নজরুল ইসলাম
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ শেখ তৌহিদুল ইসলাম
বার্তা সম্পাদকঃ মো: হুমায়ুন কবীর
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৩১ বি কে রায় রোড,খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ বাড়ি নং-২৮, রোড নং-১৪, সোনাডাঙ্গা আ/এ (২য় ফেজ) খুলনা থেকে প্রকাশিত ও দেশ প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন, ৪০ সিমেট্রি রোড থেকে মুদ্রিত।
যোগাযোগঃ ০১৭১৩-৪২৫৪৬২
ফোন : ০২-৪৭৭৭২১০০৫, ০২-৪৭৭৭২১৩৮৩
ই-মেইলঃ dailytathaya@gmail.com
কপিরাইট © দৈনিক তথ্য । সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত