২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার,সকাল ৬:৫০

রহিমা বেগম অপহরণ তদন্তে জবানবন্দির মিল পাচ্ছে না পুলিশ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২

  • শেয়ার করুন

খুলনার দৌলতপুর মহেশ্বরপাশার বহুল আলোচিত রহিমা বেগম (৫২) অপহরণ ঘটনার জট খুলতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি এমন হতে চলেছে যে উল্টো ফেঁসে যেতে পারেন রহিমা বেগম ও তার সন্তানরা। অপহরণ মামলার তদন্ত এবং রহিমার দেওয়া জবানবন্দির মিল না পাওয়ায় রহিমা ও তার সন্তানদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে পুলিশ ও অপহরণ মামলার আসামিরা।

এমন তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান।

এদিকে, খুলনা ছেড়ে ঢাকায় যাওয়ার পর সুর পালটেছেন রহিমা বেগমের আলোচিত মেয়ে মরিয়ম মান্নান। তিনি বলছেন, ভুল থাকলে সংশোধন করা যাবে।

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার বলেন, আমরা অপহরণ মামলাটি খুব ভালোভাবে তদন্ত করে চলেছি। সবকিছু আমলে নিয়েই সামনে এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু তদন্তের সঙ্গে রহিমা বেগমের জবানবন্দির কোনো মিল পাওয়া যাচ্ছে না।

জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে তারা (রহিমা ও তার সন্তান) অপহরণের নাটক সাজিয়েছেন বলে মনে করছে পিবিআই। এতে করে উল্টো ফেঁসে যেতে পারেন রহিমা বেগম ও তার সন্তানরা। তবে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এ ঘটনায় গ্রেফতার ছয়জন মুক্তি নাও পেতে পারেন বলে জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থাটি।

পুলিশ সুপার মোশফিকুর বলেন, রহিমা বেগমকে অপহরণ করা হয়েছে এরকম কোন তথ্য আমরা এখনও পাইনি। বরং মনে হচ্ছে প্রতিবেশীদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা সংক্রান্ত যে বিরোধ চলে আসছে সেই বিরোধের সূত্র ধরে তাদেরকে ফাঁসাতেই রহিমা বেগম এমন অভিযোগ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, তদন্ত শেষে যদি প্রমাণিত হয় যে অপহরণ মামলাটি মিথ্যা তাহলে যারা গ্রেফতার রয়েছেন তারা রহিমা ও তার সন্তানদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেন। পুলিশও তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে পানি আনতে বাড়ি থেকে নিচে নামেন রহিমা বেগম। এরপর আর বাসায় ফেরেননি তিনি। খোঁজ নিতে গিয়ে সন্তানরা মায়ের ব্যবহৃত জুতা, গায়ের ওড়না ও কলস রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। রাতে সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজ নিয়েও তার সন্ধান মেলেনি। এরপর সাধারণ ডায়েরি ও পরে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন তার ছোট মেয়ে আদুরি আক্তার। এ মামলা তদন্তকালে পুলিশ ও র্যাব অভিযান চালিয়ে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেফতার করে।

১৪ সেপ্টেম্বর আদালত মামলাটির তদন্তভার পিবিআইতে দেন। এখন এ মামলার তদন্ত করছে পিবিআই পরিদর্শক আব্দুল মান্নান। ২২ সেপ্টেম্বর রহিমার মেয়ে মরিয়ম আক্তার ওরফে মরিয়ম মান্নান দাবি করেন, তার মায়ের মরদেহ তিনি পেয়েছেন। তিনি ২৩ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের ফুলপুরে দিনভর অবস্থান নেন। একই সঙ্গে সেখানে ১০ সেপ্টেম্বর উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহকে নিজের মা বলে শনাক্ত করেন।

এরপর গত ২৪ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর থেকে উদ্ধার হন রহিমা বেগম। পরদিন খুলনা নিয়ে আসা হয় তাকে। ওইদিনই আদালতে জবানবন্দি শেষে তাকে মেয়ের জিম্মায় দিয়ে দেওয়া হয়। রাতেই তাকে নিয়ে ঢাকায় চলে যান মেয়ে মরিয়ম মান্নান।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন