১৩ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার,দুপুর ১:২৬

শিরোনাম
খুলনায় ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ এর ২ দিনব্যাপী “শিশু কল্যাণে পরিকল্পনা প্রণয়ন কর্মশালা-২০২৫” এর সমাপনী অনুষ্ঠিত শহীদ সাকিবের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে খুলনায় এনসিপি’র কার্যক্রম শুরু নগরীতে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর গোলাগুলি, পলাশসহ গ্রেপ্তার ১১ খুলনায় পদ্মা ব্যাংকে জমানো অর্থ ফেরত না পেয়ে বিপাকে গ্রাহকরা, ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ সকল শহীদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার বিনম্র শ্রদ্ধা ঝিনাইদহে তিন চরমপন্থী হত্যার ঘটনায় আটক ২ খুলনায় নৌবাহিনীর সমুদ্র সচেতনতা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত খুলনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী চিংড়ি পলাশ অস্ত্র ও বোমাসহ গ্রেফতার লবণচরা থানার কড়া নজরদারীতে প্রায় দেড় মণ গাঁজাসহ আটক-২

ভোমরা-ল²ীদাঁড়ী সীমান্ত মৎস্য চোরাচালানিদের ট্রানজিট রুট

প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০২১

  • শেয়ার করুন

সীমান্ত ব্যুরো প্রধান, সাতক্ষীরা ঃ
চলমান করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কঠোর লকডাউন উপেক্ষা করে প্রকাশ্য দিবালোকে ভোমরা ও ল²ীদাঁড়ী সীমান্তের চোরাই রুট দিয়ে নির্বিঘেœ ভারত থেকে পাচার হয়ে আসছে ভাইরাস আক্রান্ত গলদা রেণু বিরাট আকারের চালান। করোনার প্রাদুর্ভাবকে কাজে লাগিয়ে ভোমরা ও ল²ীদাঁড়ীর স্থলসীমান্ত এখন আন্তর্জাতিক মৎস্য চোরাচালান সিন্ডিকেটের অভয়ারণ্য। সরকারের অবৈধ অনুপ্রবেশ ও গমনাগমন বিষয়ে স্থল সীমান্তে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকলেও সীমান্তের চোরাই রুটগুলো যেন উন্মুক্ত। সাতক্ষীরার মৎস্য সম্পদকে ধ্বংস করার নীল নকশায় সক্রিয় মৎস্য চোরাচালান সিন্ডিকেট। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস মহাদূর্যোগকালকে সুসময় মনে করে অবাধে মৎস্য চোরাচালান বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে ঐ মৎস্য চোরাচালান সিন্ডিকেটের দুর্ধর্ষ চোরাকারবারিরা। স্থল সীমান্ত ভোমরা, ল²ীদাঁড়ী ও পদ্মশাঁখরা সীমান্তের চোরাই রুট দিয়ে টহলরত বিজিবি জোয়ানদের চোখ ফাঁকি দিয়ে, কখনো বা মোটা অঙ্কের চুক্তির বিনিময়ে ভারত থেকে দিনে ও রাতে পাচার হয়ে আসছে পরীক্ষা নিরীক্ষাহীন ভাইরাস আক্রান্ত নি¤œ মানের গলদা রেণুর বড় আকারের চালান। অভিযোগ উঠেছে, স্থল সীমান্তের বৈধ পথ বন্ধ থাকলেও অবৈধ পথ চোরাচালানিদের জন্য উন্মুক্ত ট্রানজিট। ভারত-বাংলাদেশ মৎস্য চোরাচালান সিন্ডিকেটের শীর্ষ চোরাচালানিরা এখন মরিয়া। ভোমরা স্থল সীমান্তে লকডাউনকে পাথেয় করে সরাসরি মৎস্য চোরাচালান মহড়ায় নেমেছে, পদ্মশাঁখরা গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের পুত্র জাকির হোসেন, একই গ্রামের নজু মুন্সীর পুত্র লাল্টু হোসেন, মৃত বাবুরালি গাজীর পুত্র কবির হোসেন, ল²ীদাঁড়ী গ্রামের নুর উদ্দীন মোল্লার পুত্র খায়রুল ইসলাম, একই গ্রামের জামাত আলীর পুত্র আমিরুল ইসলাম ও সাইদুল ইসলাম, জবেদ আলী গাজীর পুত্র সাদেক হোসেন, দেবহাটা থানার কুলিয়া গ্রামের আব্দুল লতিফের পুত্র নাজমুল হোসেন(কালু)। উল্লেখিত চোরাচালানিদের নাম বিজিবি সহ অন্যান্য প্রশাসনের কালো তালিকাভুক্ত রয়েছে বলেও সীমান্তের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। এদিকে সাতক্ষীরা সদর থানার ভোমরা ইউনিয়নের গয়েশপুর গ্রামের সাবেক ঘাট মালিক ও চোরাচালান সিন্ডিকেটের মূলহোতা আনারুল ইসলামের নেতৃত্বে চলে এ বিশাল চোরাচালান সিন্ডিকেট। দীর্ঘদিন এ চোরাচালান সিন্ডিকেটের কার্যক্রম বহাল তবিয়তে চললেও কোন অদৃশ্য শক্তির কারণে সীমান্তে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। এমন অভিযোগ রয়েছে সীমান্তবর্তী এলাকার লোকজনদের মধ্যে। করোনা ভাইরাসের চলমান লকডাউনের মধ্যে থেমে নেই তাদের কোটি কোটি টাকার মৎস্য চোরাচালান ব্যবসা। সীমান্তরক্ষী বিজিবি সদস্যদের সকল বাঁধা বিপত্তি উপেক্ষা করে রাজপথে নেমে পড়েছে শীর্ষ মৎস্য চোরাচালানি সিন্ডিকেট। কোনো বাঁধাকেই তারা বাঁধা বলে মানছে না। স্থল সীমান্ত ভোমরা, ল²ীদাঁড়ী ও শাঁখরাকে চোরাচালানিরা নিজস্ব সম্পত্তি বলে মনে করার পায়তারা করছে। ফলে, ভারত থেকে বানের ¯্রােতের মতো নির্বিঘেœ পাচার হয়ে আসছে ভাইরাসযুক্ত গলদা রেণুর চালান। যার প্রভাব পড়ছে সাতক্ষীরার মৎস্য ব্যবসায়ী ও মৎস্য উৎপাদনকারী ব্যবসায়ীদের মধ্যে। ভারতীয় ভাইরাস আক্রান্ত গলদা রেণু অধিক লাভের আশায় ব্যবসায়ীরা চাষাবাদ করছে। কিন্তু লাভের চেয়ে লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছে তারা। মৎস্য ঘেরে বা হ্যাঁচারিতে ভারতীয় গলদা রেণু চাষে ভয়াবহ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। যার কারণে দেশীয় মৎস্য প্রজনন ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে। সাতক্ষীরার অধিকাংশ মৎস্য ঘেরে ছাড়া হচ্ছে ভারতীয় গলদা রেণু। ভারত থেকে আসা স্বল্প মূল্যে ক্রয় করা ভাইরাস আক্রান্ত গলদা রেণু বিভিন্ন মৎস্য ঘেরে চাষাবাদে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হওয়ায় দেশীয় মৎস্য প্রজনন হুমকির মুখে পড়েছে। এমন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী একাধিক মৎস্য ব্যবসায়ী সংগঠন। ভারতের দীঘা, উড়িষ্যা, মেদিনীপুর ও হলদিয়া সহ বিভিন্ন প্রদেশে ব্যবসায়ী হ্যাচারী থেকে পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই ভাইরাস আক্রান্ত নি¤œমানের গলদা রেণুর বড় আকারের চালান সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়ে আসে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বশিরহাটে। এখান থেকে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ভারতীয় চোরাচালানিরা গলদা রেণুর চালান পৌছে দেয় ঘোজাডাঙ্গা ও পানিতর সীমান্তে। এখান থেকে সুযোগ বুঝে সীমান্ত টপকে চলে যায় ভারত সীমান্তে। অনেক সময় চোরাচালানের কৌশল পরিবর্তন করে মহিলা চোরাচালানিদের মাধ্যমেও ভারতের সীমান্তাঞ্চল থেকে পাচার করে আনা হয় গলদা রেণুর চালান। মাঝে মধ্যে বিজিবি সদস্যদের হাতে কিছু গলদা রেণু আটক হলেও সিংহভাগ চলে যায় কুলিয়াসহ বিভিন্ন মৎস্যসেটে। সীমান্তাঞ্চলের প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এদিকে ভোমরা, ল²ীদাঁড়ী ও পদ্মশাঁখরা সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে গলদা রেণুর চালান পাচার হওয়া সম্পর্কে বিজিবি গোয়েন্দা (এফএস) আল মামুনের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, কোভিড-১৯ মহামারী ভাইরাস চলাকালীন সময়ে সাতক্ষীরা সীমান্তে সমগ্র চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি জোয়ানরা অভিযান অব্যহত রেখেছে। এছাড়া ভারত থেকে পাচার হয়ে আসা গলদা রেণুর বেশ কিছু চালান আটক করা হয়েছে। গলদা রেণুসহ যেকোনো চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি সদস্যরা সতর্কাবস্থায় থেকে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন