প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২১
প্রকাশিত:
মিলন হোসেন বেনাপোল।
যশোর জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৭ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনের জন্য স্বপ্ন দেখেছেন। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন এ্ই দেশের শতকরা ৮০ জন কৃষককে স্বচ্ছল করে তুলতে হবে তবে হবে আমাদের স্বাধীনতার স্বার্থকতা। তার নতুন নতুন স্বপ্ন যখন এক এক করে এদেশের মানুষের মঙ্গলের জন্য নতুন দিগন্তের সুচনা শুরু হলো তখন আমরা দেখলাম ১৫ আগষ্ট। বিশে^র কাছে যে জাতি ছিল বীরের জাতি যে জাতি ছিল প্রশংসার জাতি সেই জাতি এদেশের কিছু বিপথগামি সেনা সদস্যদের জন্য মুহুর্তের মধ্যে বিশ^ নেতাদের কাছে বেঈমানের জাতিতে পরিনত হলো। আমাদের এই স্বাধীন সার্বোভৌম রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের জনক বঙ্গবন্ধু মুসলিম বিশে^র সমাবেশে যোগ দেওয়ার মনস্তাব করেছিলেন তখন অনেক তর্ক বিতর্ক হয়েছিল।এরপর তিনি যোগ দিলেন এবং সেখানে বক্তব্য রাখেন। সেই সময় কায়রোতে ভুয়াশী প্রসংশা করে সংবাদ প্রকাশ হলো একটি বন্দুকের গুলি ব্যবহার না করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মুসলিম বিশ^কে জয় করলেন। তিনি রবি ঠাকুরের একটি চিঠির উদাহরন টেনে বলেন, আমার কোন প্রতিষ্ঠানের প্রতি বিশ^াস নেই। আমার বিশ^াস স্ইে মানুষগুলোর উপর যে মানুষ এর মধ্যে রয়েছে মহানুভবতা, সঠিক কর্ম, যথার্থ চিন্তা আমি সেই মানুষগুলোকে নেতা বলি। আমরা যদি মনে করি জাতির জনক নেতা কি না। ১৯৪৭ সালে যখন পাকিস্তান ভাগ হলো তখন কোলকাতা বেকার হোষ্টেলে বন্ধুদের নিয়ে একটি ছোট্র সমাবেশে তিনি বলেছিলেন আজ পাকিস্তান ও পুর্ব পাকিস্তান ভাগ হয়েছে এই পাকিস্তান কখনো কোন দিন বাঙালীর স্বার্থ রক্ষা করবে না। তাই আমাদের স্বাধীনতা প্রয়োজন। তার সেই সুদুর প্রসারি চিন্তা চেতনাকে আমরা নেতা না বলে থাকতে পারি। ইতিহাসের মহানায়ক শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেছিলেন সবুজ শ্যামল এই বাংলায়। তাঁর জন্ম ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ তিনি পিতা-মাতার তৃতীয় সন্তান ছিলেন। পরিবারের সবাই ‘খোকা’ নামে ডাকতেন। কেউ কি ভেবেছিল শেখ পরিবারের আদরের ছোট্ট খোকা একদিন বিশ্ব নন্দিত নেতা হবেন কিংবা স্বাধীনতায় নির্যাতিত-নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর ত্রাণকর্তা? গভীর দেশপ্রেম, সীমাহীন আত্মত্যাগ ও অতুলনীয় নেতৃত্বে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা। তাঁর বীরত্বপূর্ণ নেতৃত্বে একটি দেশ স্বাধীন হয়েছে। বাংলার শোষিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ে নেতৃত্বের জন্য জনগণ তাঁকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেন। বাঙালির স্বাধীনতা অর্জনে তাঁর সীমাহীন ত্যাগ-তিতিক্ষা, জেল-জুলুম, নির্যাতন-কারাবন্দির কারণে ইতিহাসে তাঁকে জাতির পিতার অভিধায় অভিষিক্ত করা হয়। ’কথাগুলো বললেন জাতিয় শোক দিবস বঙ্গবন্ধুর ৪৬ তম সাহাদৎ বার্ষিকীতে নাভারন সাতক্ষীরা মোড়ে প্রধান অতিথি হিসাবে মেয়র লিটন।
শুক্রবার বেলা ৪ টার সময় শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি শহিদুল আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি মেয়র লিটন বলেন,১৯৪৭ সালে তিনি কোলকাতার মিল্লাত পত্রিকায় গিয়ে বলেছিলেন পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা হবে বাংলা। ১৯৬১ সালে তিনি বামপন্থী রাজনৈতিক নেতাদের গোপন বৈধকে বলেছিলেন আপনাদের সব কথা মানব তবে স্বাধীনতার বিকল্প কিছুই নেই। স্বাধীনতার জন্য কারো সাথে আপোষ নাই। ছয় দফ দাবির বিষয় নিয়ে ন্যাপ মোজাফার বলেছিলেন আপনি কি বোঝাতে চাইছেন আমার দাবিতো একটি সেটা হলো স্বাধীনতা।
বঙ্গবন্ধু কখনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দিতেন না কিংবা অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। শিশুকাল থেকেই কারো সাথে অন্যায় করা হচ্ছে বা কারো অধিকার হরণ করা হচ্ছে দেখলে প্রতিবাদীরূপে তিনি সেখানে আবির্ভূত হতেন। অসহায় মানুষ দেখলে তিনি ব্যাকুল হয়ে যেতেন। তাইতো তিনি বাংলার জনগণের কাছ থেকে স্বীকৃতি পেয়েছেন হাজার বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে। তাই বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ যেন মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। এটি কেবল কথার কথা নয়, দেশ-বিদেশের অনেক বিখ্যাত মানুষের উক্তি-লেখা পাঠেও সে বিষয়টি স্পষ্ট ধরা পড়ে। সেই কারণেই হয়তো আহমদ ছফা লিখেছেন, ‘একজন ব্যক্তির শারীরিক মৃত্যুর মধ্য দিয়ে একটি রাজনৈতিক মিশনকে হত্যা করা যায় না। কারণ ব্যক্তির মৃত্যু ঘটতে পারে; কিন্তু আদর্শের মৃত্যু নেই।’ আজকে সবার কাছে এটাই স্পষ্ট- বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আমরা লাল-সবুজের একটি পতাকা পেতাম না; নিজেদের স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতে পারতাম না। জাতির জনকের প্রতি আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা।
তিনি আরো বলেন জাতির জনকের কন্যা ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে হাজার হাজার মাইল হেটেছেন এই অবহেলিত জনগোষ্টিকে তার পিতার দেখানো স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে। এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে তিনি বার বার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন। তাকে পাকিস্তানী ও স্বাধীনতা বিপথগামিরা হত্যার জন্য ব্যার্থ চেষ্টা করেছে। তাদের পরিকল্পনা ছিল জাতির জনককে হত্যা করতে পারলে চিরদিন এই দেশকে লুটে পুটে খাওয়া যাবে। জাতির জনকের প্রকৃত সৈনিকেরা এখনো এদেশে আছে। তারা তার লালিত স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে তার কন্যাকে সহযোগিতা করে চলেছে। আর যারা তার স্বন্নকে নস্যাৎ করতে চায় তারাও জাতির জনকের সৈনিকদের অপমান অপদস্ত এবং তাদের সভা সমাবেশ এর মঞ্চ ভাংগতে অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন আর বাদরামি করবেন না। আমরা যেমন সভা সমাবেশ জাতির জনকের শোক পালন করছি সেই রকম করে দেখান। আজ জনশুন্য হয়ে ব্যর্থ অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন এর সঠিক জবাব পাবেন।
তিনি আরো বলেন,১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত যাওয়ার পর দীর্ঘ ১৯০ বছরে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন শোষণ ও নির্যাতনের হাত থেকে ১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ মুক্তি পেলেও পূর্ব বাংলার বাঙালির উপর নেমে আসে কঠিন অন্ধকার । ধর্মের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত জিন্নাহর ভ্রান্ত দ্বিজাতি তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে ভারত থেকে আলাদা হয়ে পাকিস্তান নামের একটি অসম রাষ্ট্রর জন্ম হয়! এর মধ্য দিয়ে।
প্রেরক
মিলন হোসেন বেনাপোল
তারিখ ২৭/০৮/২১
মোবাইল ০১৭১২২১৭১৪৩