২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার,সকাল ৭:৪৮

খুলনাসহ সারাদেশে বৃষ্টিপাত, দুর্যোগের ঘনঘটা

প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২০

  • শেয়ার করুন

বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে সারাদেশে বৃষ্টিপাতে দুর্যোগময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ায় উপকূল এলাকা খুলনাসহ সারাদেশে হালকা থেকে মাঝারি, কোথাও ভারী বৃষ্টিপাতে জনজীবন স্থবির হয়ে গেছে। দুর্গা পূজার মৌসুমে ভারি বৃষ্টির বার্তা নিয়ে এই বায়ুচক্র পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

লঘুচাপের প্রভাবে ঝড়ো হাওয়ার শঙ্কায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সেইসঙ্গে দেশের ছয়টি অঞ্চলের নদীবন্দরে দুই নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি এবং বাকি অঞ্চলের নদীবন্দরগুলোকে এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আরিফ হোসেন জানান, লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে বুধবার রাতে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। সেটি এখন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকা থেকে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

“এটি আরও ঘনীভূত হবে। শুক্র-শনিবারের দিকে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। তারপর আরও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে কিনা, বা কোন দিকে অগ্রসর হবে তা সুনির্দিষ্ট করে বলা যাবে শুক্রবার।”

এদিকে ভারতের আবহাওয়া অফিস বলেছে, এই সুস্পষ্ট লঘুচাপ আগামী ২৪ ঘণ্টা উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে এবং আরও ঘণীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে। তার পরের ২৪ ঘণ্টায় এটি গভীর নিম্নচাপের রূপ পাবে, অগ্রসর হবে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলের দিকে।

এর প্রভাবে অন্ধ্র প্রদেশ, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারেতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শনিবার পর্যন্ত ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছেন দেশটির আবহাওয়াবিদরা।

ভারতের আবহাওয়া বিভাগের মহা পরিচালক মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্রকে উদ্ধৃত করে ইনডিয়ান এক্সপ্রেস লিখেছে, শনিবার সকাল নাগাদ ওই বায়ুচক্র নিম্নচাপের আকারেই পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

বৃহস্পতিবার ষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে এবারে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে। এই দুর্গাপূজাই বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। ২৬ অক্টোবর সোমবার দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হবে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।

ভারতীয় আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস ঠিক থাকলে শনিবার অষ্টমী পর্যন্ত ভারি বৃষ্টির মধ্যেই পূজার সময়টা কাটাতে হবে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের। অবশ্য করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্যবিধির কড়াকড়িতে এমনিতেই এবার উৎসবের সেই আমেজ নেই।

লঘুচাপের প্রভাবে বাংলাদেশেও বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে বুধবার থেকে। আগামী এক দিনে বৃষ্টির প্রবণতা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন।

বৃহস্পতিবারের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; রাজশাহী , ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর বিভাগরে কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে ।

বৃষ্টির এই প্রবণতা পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে । এরপর বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কিছুটা কমে আসতে পারে। বৃহস্পতিবার সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।

আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

সে কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

সেই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

এছাড়া খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকার নদীবন্দরগুলোকে দুই নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলের নদীবন্দরগুলোকে এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।

ভাল লাগলে শেয়ার করুন
  • শেয়ার করুন