প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২১
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অধ্যাপক সেলিম হোসেনের মৃত্যুতে অস্বাভাবিকতা পাওয়া গেলে তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সংবাদমাধ্যমে শনিবার পাঠানো বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশের কথা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
গত ৩০ নভেম্বর বিকেলের দিকে কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সেলিমের মৃত্যু হয়। এর পরই অভিযোগ ওঠে কিছু ছাত্রের লাঞ্ছনা ও অপদস্তের শিকার হয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন সেলিম।
এ-সংক্রান্ত কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন ছাত্র ক্যাম্পাসের রাস্তায় ড. সেলিম হোসেনের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছেন। পরে তারা সেলিমকে অনুসরণ করে তড়িৎ প্রকৌশল ভবনে ব্যক্তিগত কক্ষে প্রবেশ করেন। প্রায় ৩০ মিনিট পর তারা সেখান থেকে বের হয়ে যান। পরে অধ্যাপক সেলিম সেখান থেকে বের হয়ে বাসায় ফেরেন।
ওই শিক্ষকের স্ত্রী জানান, বাসায় ফেরার পর সেলিম টয়লেটে যান। বের হতে দেরি হওয়ায় তিনি দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখেন অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন তার স্বামী। সেখান থেকে উদ্ধার করে তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
কিছু ছাত্রের কারণে এ শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে দাবি তুলে বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ র্যালি ও সমাবেশ করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়, উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্রের অপমান, অবরুদ্ধ ও মানসিক নির্যাতনে অধ্যাপক সেলিমের মৃত্যু হয়।
সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার না করা পর্যন্ত শিক্ষকরা সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন বলেও ঘোষণা দেন।
এই প্রেক্ষাপটে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত কুয়েট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এ সিদ্ধান্তের পর শিক্ষার্থীরা হল ছেড়েছেন। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
৯ ছাত্র বহিষ্কার
কুয়েট শিক্ষক সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় ৯ ছাত্রকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কার হওয়া ছাত্রদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান আছেন।
কুয়েটের জনসংযোগ কর্মকর্তা মনোজ কুমার মজুমদার বলেন, সেলিমের মৃত্যুর ঘটনায় সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করা হয়। ফুটেজ দেখে শিক্ষকের সঙ্গে ওই ৯ ছাত্রের অসদাচরণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
যাদের বহিষ্কার করা হয়েছে তারা হলেন সিএসই বিভাগের সাদমান নাহিয়ান সেজান, সিই বিভাগের তাহমিদুল হক ইশরাক, এলই বিভাগের সাদমান সাকিব, আ স ম রাগিব আহসান মুন্না, সিই বিভাগের মাহমুদুল হাসান, এমই বিভাগের মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান, সিএসই বিভাগের রিয়াজ খান নিলয়, এমই বিভাগের ফয়সাল আহমেদ রিফাত ও এমএসই বিভাগের নাইমুর রহমান অন্তু।